গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় করতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্থানীয় সময় রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
কোয়াড সামিটে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে ভারতীয় প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে দেশটির উত্তরোত্তর উন্নতি নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সঙ্গে, দেশের বাইরে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করার জন্য প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মান জানান তিনি।
২০২০ সালের এক সমীক্ষা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরতদের মধ্যে অন্তত ৪৫ লাখ মানুষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এদিকে, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপক্ষে অংশ নিচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট নেতা কামালা হ্যারিস। স্বাভাবিকভাবেই এবারের মার্কিন নির্বাচন ভারতীয়দের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যদিও, এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি মোদি। তবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভারত গণতন্ত্রকে সমর্থন করে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিশ্ববাসীর জন্য ২০২৪ সাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বেড়ে চলছে বিরোধ। আরেকদিকে, অনেকগুলো দেশেই গণতন্ত্রকে উদযাপন করা হচ্ছে। ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে গণতন্ত্রের জয়গান গাইছে।
এসময়, অদূর ভবিষ্যতে ভারত প্রযুক্তি খাতে পশ্চিমাদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে বলে দাবি করেন তিনি। মোদি বলেন, এরমধ্যেই, নিজস্ব অর্থায়ন এবং লোকবল ব্যবহার করে সিক্স জি প্রযুক্তি তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে ভারত। সেই দিন খুব বেশি দূরে নেই যখন ভারতে উৎপাদিত চিপসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার ছেয়ে যাবে।
এছাড়াও, ভারত তার ক্ষমতা বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারে নয়, বরং বিশ্ববাসীর উন্নয়নে ব্যবহার করতে চায় বলেও ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি।
এদিকে নিউইয়র্কে প্রযুক্তি ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের শীর্ষ ১৫ নির্বাহী প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকের পর শীর্ষ কর্মকর্তারা, ভারতের মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভারতকে তাদের জন্য এক অসাধারণ অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন।
নরেন্দ্র মোদি জানান, বর্তমান মেয়াদে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে তার সরকার। বৈঠকে তিনি ভারতের প্রযুক্তি খাতের উন্নতি এবং উদ্ভাবনের অগ্রগতি তুলে ধরেন। এছাড়া দেশের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত প্রবৃদ্ধিকে কাজে লাগাতে বিনিয়োগের জন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমন্ত্রণ জানান।
মোদি বলেন, ভারত প্রযুক্তিকে গণতান্ত্রিকরণে যে কাজ করেছে তা সফলভাবে যেকোনো ধরনের বিভেদ দূর করেতে সক্ষ্ম হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নৈতিক ও দায়িত্বশীল ব্যবহারে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এমনকি যখন আমরা জি টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেই তখনও এর নৈতিক ব্যবহারের বিষয়টি একটি বড় এজেন্ডা ছিল।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানা যায়, বৈঠকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম বায়োটেকনোলজি, কম্পিউটিং, আইটি, যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং সেমিকন্ডাক্টার উৎপাদন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :