পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারকে বেঁধে দেওয়া সময়ে দাবি পূরণ না হওয়ায় কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা আমরণ অনশন শুরু করেছেন।শনিবার (৫ অক্টোবর) রাত থেকে তারা এ অনশনে বসেন। এদিন রাত ৮টার দিকে কলকাতা শহরের ধর্মতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন।
আরজি করের ঘটনায় ১০ দফা দাবি পূরণের জন্য ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) তারা ঘোষণা দিয়েছিলেন, যদি নির্ধারিত সময়ে দাবি পূরণ না হয় তাহলে তারা আমরণ অনশনে যাবেন।
শনিবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আমরণ অনশনে বসলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আপাতত ছয়জন এই অনশনে বসেছেন।
কলকাতার ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চে এ অনশন চলছে। এরই মধ্যে ছয়জন জুনিয়র চিকিৎসক তাতে যোগ দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, অনশন মঞ্চে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য তারা সিসিটিভি বসাচ্ছেন। কেউ অসুস্থ হলে রাজ্য সরকারকেই দায় নিতে হবে।
জুনিয়র চিকিৎসকরা বলেন, আমরা জানি এখানে অনশনে বসলে আরো বাধা আসবে। তবুও আমরা অনশন চালিয়ে যাবো। পুরো রাজ্যে মানুষ যেভাবে প্রতিবাদে পথে নেমেছেন, তাতেই বোঝা যায় আমাদের দাবিগুলো কতটা যুক্তিপূর্ণ। এ লড়াই শুধু ডাক্তারদের নয়। সাধারণ মানুষ যেভাবে পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন, তাতে এই লড়াই আমরা জিতবোই। দাবি পূরণ অথবা তাদের মৃত্যু- তার আগে তারা অনশন ছেড়ে যাবেন বলেও জানান।
চিকিৎসকদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথম দফায় ছয়জন জুনিয়র চিকিৎসক অনশনে বসবেন। পরে ধাপে ধাপে আরও অনেকেই অনশনে বসবেন। এছাড়া জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরজি করের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সিবিআই যে তদন্ত প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তাতে মানুষের আস্থা নেই।
তারা আরো জানিয়েছে, প্রথমদিকে সিবিআইয়ের তদন্তের ওপর আস্থা ছিল। কিন্তু এখন তা নেই। আদালতে যে শুনানি হচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে না তদন্ত ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে।
গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের বলি হন মেডিকেল পড়ুয়া এক ছাত্রী। ওই ঘটনার পর সুবিচার ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলনে নামেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন তারা। এরপরও কোনো পক্ষই এখনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি।
আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় নারী চিকিৎসকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)।
সূত্র: এনডিটিভি
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :