ফিলিপাইনের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানা ক্রান্তীয় ঝড় ট্রামির প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১০০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ রয়েছে আরও অন্তত তিন ডজন মানুষ। রোববার দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা ট্রামির আঘাতে হতাহতের এই সংখ্যা জানিয়েছেন।
নিখোঁজদের সন্ধানে ফিলিপাইনের উদ্ধারকারীরা উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন হ্রদ ও বিচ্ছিন্ন গ্রামে গ্রামে অভিযান পরিচালনা করছেন। চলতি বছরে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে যত ঝড় আঘাত হেনেছে, তার মধ্যে ট্রামিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী। গত বৃহস্পতিবার ফিলিপাইনের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে আসে ট্রামি।
ফিলিপাইনের জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ট্রামির আঘাত থেকে বাঁচতে প্রায় ৫ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ট্রামির আঘাতে সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হওয়া দেশটির বিকোল অঞ্চলে পুলিশ অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছে; যাদের বেশিরভাগই পানিতে ডুবে মারা গেছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।বিকোলের আঞ্চলিক পুলিশ পরিচালক আন্দ্রে দিজোন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আমরা এখনও প্রচুর টেলিফোন কল পাচ্ছি এবং আমরা যত মানুষকে সম্ভব বাঁচানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি, আর কারও মৃত্যু ঘটবে না।
তিনি বলেন, কামারাইনস সুর প্রদেশের অনেক বাসিন্দা এখনও তাদের বাড়িঘরের ছাদে এবং ভবনে আটকা রয়েছেন। ম্যানিলার দক্ষিণাঞ্চলের বাতানগাস প্রদেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫৫ জনে পৌঁছেছে বলে প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান জেসিন্তো মালিনাও এএফপিকে জানিয়েছেন।
পুলিশ বলেছে, ক্যাভিটে প্রদেশে পানিতে ডুবে ও বিদ্যুতায়িত হয়ে দু’জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ফিলিপাইনের পুলিশ ও জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অন্যান্য প্রদেশ থেকে আরও পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে দেশটিতে ক্রান্তীয় ঝড় ট্রামির আঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১০০ জনে পৌঁছেছে।
দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা এডগার পোসাদাস এএফপিকে বলেছেন, উদ্ধারকারীরা এখনও অনেক বিচ্ছিন্ন এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না। যে কারণে আগামী দিনগুলোতে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রোববার ফিলিপাইনের জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা বলেছে, ক্রান্তীয় ঝড় ট্রামির প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বন্যায় উত্তর ফিলিপাইনের শত শত গ্রাম তলিয়ে গেছে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপ দেশটিতে কিংবা এর আশপাশে প্রত্যেক বছর অন্তত ২০টি বড় ধরনের ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। প্রাকৃতিক এসব দুর্যোগে হাজার মানুষের ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া ঝড়ের তাণ্ডবে প্রাণহানি ঘটে অনেকের।
সূত্র: এএফপি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :