লন্ডন থেকে নিউইয়র্কের দূরত্ব মাত্র এক ঘণ্টার! বিশ্বাস হচ্ছে না? বিশ্বাস না হলেও এমন অভাবনীয় যাত্রার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ভ্যাকুয়াম টিউব প্রযুক্তির মাধ্যমে তিন হাজার মাইল দীর্ঘ একটি ট্রান্স-আটলান্টিক টানেল নির্মাণের আলোচনা সম্প্রতি সামনে এসেছে। তবে এ প্রকল্পের খরচ এবং সময়ের হিসাব চমকে দেওয়ার মতো। বিশাল এই প্রকল্পের বাজেট ধরা হয়েছে ২০ ট্রিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ২০ লাখ কোটি ডলারের সমান।
তবে এই টানেল নির্মাণে হাজার বছর লেগে যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে নিউজউইক। ইউরোপের চ্যানেল-টানেল প্রকল্পের বর্তমান অগ্রগতির গতি বিবেচনা করেই এমন বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ইউরোপজুড়ে একাধিক টানেল নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে নরওয়েতে শুরু হওয়া রোগফাস্ট প্রকল্পটি হতে যাচ্ছে সমুদ্রতলে বিশ্বের দীর্ঘতম ও গভীরতম টানেল। একই সঙ্গে ডেনমার্ক ও জার্মানির মধ্যে ফেহমার্নবেল্ট টানেল নির্মাণের কাজ এগোচ্ছে। এটি হবে বিশ্বের দীর্ঘতম সড়ক ও রেল টানেল।
দক্ষিণ ইউরোপেও বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে। গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাবনা নিয়েও আলাপ চলছে।
টানেল প্রকল্পগুলো যেমন প্রযুক্তিগতভাবে চ্যালেঞ্জিং, তেমনি খরচের দিক থেকেও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। যুক্তরাজ্যের হাই স্পিড ২ (এইচএস২) প্রকল্প, যা বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল রেল প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত, প্রতি মাইল নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৪১ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
এর আগে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডকে সংযুক্ত করতে একটি ১২ মাইল দীর্ঘ ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ সমুদ্রের গভীরতায় তেজস্ক্রিয় বর্জ্য এবং অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের উপস্থিতির কারণে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়।
বিশ্বজুড়ে টানেল প্রকল্পগুলো নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সমাধানের ওপর নির্ভরশীল। তবে তিন হাজার মাইল দীর্ঘ ট্রান্স-আটলান্টিক টানেল বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
বিশ্বজুড়ে সংযোগ স্থাপনের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে এই প্রকল্পগুলো। কিন্তু প্রযুক্তি ও খরচের সীমাবদ্ধতার কারণে এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন কতটা সম্ভবপর, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :