ভারতের ঝাড়খন্ডে গোড্ডা প্ল্যান্টে বাংলাদেশের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আদানি গ্রুপ। কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বকেয়া ও চুক্তি সংক্রান্ত নানা জটিলতায় এই প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে শিল্প গোষ্ঠীটি। বর্তমানে গোড্ডা প্ল্যান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রতিবেশি অন্যান্য দেশগুলোর কাছে বিক্রি করার কথা ভাবছে আদানি। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ শ্রীলঙ্কা। এ জন্য বাংলাদেশের সম্মতি নিতে হবে আদানিকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন। আদানি পাওয়ারের ঝাড়খণ্ড প্ল্যান্ট বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষায়িত প্রকল্প। চুক্তি অনুযায়ী এই প্ল্যান্টে শুধু বাংলাদেশের জন্যই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ার চাপে পড়েছে আদানি পাওয়ারের এই প্রকল্পটি। প্রকল্পটি টিকিয়ে রাখতে ভারত সরকার গোড্ডা প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ দেশের মধ্যে বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছে। এ জন্য আদানিকে একটি নতুন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে হবে। কারণ বর্তমান নেটওয়ার্কটি শুধুই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির জন্য নির্মিত। বাংলাদেশ যদি অনুমোদন দেয়, সেক্ষেত্রে আদানি পাওয়ার গোড্ডা প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ শ্রীলঙ্কার কাছে বিক্রি করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় নিয়মকানুনের কোনো বাধা নেই।
অন্তবর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বিজনেসলাইনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য নিবেদিত প্রকল্পটি শ্রীলঙ্কার কাছে বিক্রি করতে হলে, আমার ধারণা, তাদের বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সম্মতির প্রয়োজন হবে।’ দ্য হিন্দু বিজনেস লাইস ব্যাপারে মন্তব্য জানতে আদানি গ্রুপের কাছে মেইল করলেও তারা কোনো উত্তর দেয়নি।
বাংলাদেশের কাছে কাছে আদানির এখনো ৮০ কোটি ডলার বা ১০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। গত মাসে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি তাদের এক কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। এরপরও ঝাড়খন্ডে কয়লা সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে বলে আদানির কর্মকর্তারা পিডিবিকে জানিয়েছে। বিপিডিবি বলেছে, ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি নিয়ে সমাধান করা হলেও আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।
অপরদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বাংলাদেশ আদানির জন্য ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খুলেছে এবং অর্থ পরিশোধ ত্বরান্বিত করেছে। আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ হ্রাস এবং ঢাকার পেমেন্টের বিশদ সম্পর্কে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেননি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :