AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

‘গাজা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি’ ঘোষিত


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৪:২৬ পিএম, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
‘গাজা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি’ ঘোষিত

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে বুধবার যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তি ঘোষণা করেছে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তি গাজা যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের পথ প্রশস্ত করবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। কাতারের রাজধানী দোহা থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল-ছানি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গাজা উপত্যকার যুদ্ধমান দুই গ্রুপ একটি যুদ্ধবিরতি  চুক্তিতে পৌঁছেছে এবং রোববার থেকে এটি কার্যকর হবে। ‘আমরা আশা করি এটি হবে যুদ্ধের শেষ অধ্যায় এবং আমরা আরও আশা করি যে, সব পক্ষ এই চুক্তির সমস্ত শর্ত বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে।’ এদিকে, বাইডেন এই আপস আলোচনাকে তার ক্যারিয়ারের কাজগুলোর মধ্যে ‘সবচেয়ে কঠিনতম’ অভিহিত করে বলেন, এই দিন এসেছে বলে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট।’ তিনি আরো বলেন, চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ চূড়ান্ত হলেই ‘যুদ্ধের স্থায়ী অবসান’ ঘটবে। চুক্তিটি বহাল থাকবে বলে তিনি আস্থা প্রকাশ করেন।

মধ্যস্থতাকারীরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে জানানোর পর, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, ‘চূড়ান্ত বিবরণ’ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নেতানিয়াহুর কার্যালয় বুধবার জানায়, চুক্তিটি সুরক্ষিত করতে তাদের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে নেতানিয়াহু কথা বলেছেন।

ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগ, এই চুক্তির ব্যাপারে মূলত আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করেন। তিনি বলেন,  চুক্তিটি যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটনো ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে হামাসের হামলার সময় আটককৃত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার ‘সঠিক পদক্ষেপ’।

৭ অক্টোবরের হামাসের হামলা ছিল ইসরাইলের ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক। ইসরাইলি সরকারি হিসাব ভিত্তিক এএফপির পরিসংখ্যান অনুসারে, ওই হামলার ফলে, ১,২১০ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই ছিল বেসামরিক নাগরিক, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মতে সেদিন হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করে, যাদের ৯৪ জন এখনও গাজায় আটক রয়েছে এবং ৩৪ জন নিহত হয়েছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, পরবর্তীতে ইসরাইলের অবিরাম অভিযানে গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে, সেখানে ৪৬,৭০৭ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, চুক্তি ঘোষণার পর ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে।তেল আবিবে বিক্ষোভকারীরা চুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে জিম্মি মুক্তির দাবি জানায়, অন্যদিকে গাজা জুড়ে হাজার হাজার মানুষ চুক্তিটি উদযাপন করছে।

গাজা নগরীর বাস্তুচ্যুত ৪৫ বছর বয়সী রান্ডা সামেহ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটছে। আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি, আমরা সবকিছু হারিয়েছি।’

হামাস বলেছে , যুদ্ধবিরতি ‘আমাদের মহান ফিলিস্তিনি জনগণের কিংবদন্তি তুল্য দৃঢ়তা এবং গাজা উপত্যকায় আমাদের সাহসী প্রতিরোধের ফলাফল।’

সাম্প্রতিক দিনগুলোয় মধ্যস্থতাকারী কাতার, মিসর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তিকে দৃঢ় করার প্রচেষ্টা জোরদার করার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি বন্ধ করার চাপ তীব্রতর হয়েছে।

কাতারের শেখ মোহাম্মদ বলেছেন, তিনটি দেশ কায়রোতে অবস্থিত একটি সংস্থার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে। তিনি বলেন, প্রাথমিক ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। যাদের মধ্যে বেসামরিক নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও আহত ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। প্রথম পর্যায়ে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে প্রত্যাহার করবে পাশাপাশি যার বিনিময়ের বাস্তুচ্যুত মানুষদের তাদের বাসস্থানে ফিরিয়ে আনা হবে।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ইসরাইলি জিম্মিদের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের সংখ্যা প্রাথমিক ৪২ দিনের মধ্যে ‘চূড়ান্ত’ করা হবে।

বাইডেন বলেছেন যে এই চুক্তি ‘ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করবে এবং জিম্মিদের পরিবারের সাথে পুনর্মিলন ঘটাবে।’

টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট হার্জোগ বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনার চেয়ে বড় নৈতিক, মানবিক, ইহুদি বা ইসরাইলি দায়িত্ব আর কিছু হতে পারে না। গাজার ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কয়েক মাস ধরে ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর, বাইডেনের উত্তরসূরি ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের মাত্র ক’দিন আগে এই চুক্তি করা হলো।  ট্রাম্প হোয়াইট হাউস কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার আগেই এই চুক্তিকে স্বাগত জানান।

ট্রাম্পের আসন্ন প্রশাসন ও বাইডেনের বিদায়ী প্রশাসন উভয়ের দূতরা সর্বশেষ আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন, মার্কিন নির্বাচনে নভেম্বরে আমাদের ঐতিহাসিক বিজয়ের ফলেই এই মহাকাব্যিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব হয়। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আরো বলেন , গাজা যাতে আর কখনও সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য তার হোয়াইট হাউস ইসরাইল ও তাদের মিত্রদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।

তবে নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার কট্টর-ডানপন্থী সদস্য অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ, চুক্তির ওপর ভোটাভুটির আগে বলেছিলেন, এটি ‘ইসরাইল রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য একটি খারাপ এবং বিপজ্জনক চুক্তি।’

মিশরের প্রেসিডেন্ট  আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এই চুক্তির খবরকে স্বাগত জানিয়ে গাজায় ‘জরুরি মানবিক সাহায্যের প্রবেশ ত্বরান্বিত করার গুরুত্ব’ তুলে ধরেছেন।

মিশরের রাষ্ট্র-সংশ্লিষ্ট আল-কাহেরা সংবাদমাধ্যম একটি নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য মিশরের সাথে গাজার সীমান্তে রাফাহ ক্রসিং পুনরায় চালু করার জন্য সমন্বয়য় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।এই মাসের শেষের দিকে কার্যক্রমের ওপর ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে যাওয়া জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) বলেছে, তারা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান অব্যাহত রাখবে।

ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি এক্স-এ একটি পোস্টে চুক্তির খবরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘গত ১৫ মাস ধরে অনেকেই মুহূর্তটির প্রত্যাশা করছেন, এই যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ দুর্ভোগের প্রতিক্রিয়ায়  দ্রুত, অবাধ ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা  প্রবেশ ও সরবরাহের প্রয়োজন।’

 

একুশে সংবাদ/ এস কে

Link copied!