গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের পথে এগোচ্ছে আরব দেশগুলো। তারা গাজার ওপর মার্কিন প্রভাব বিস্তার এবং সেখানকার জনগণকে উচ্ছেদের যেকোনো পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসছেন আরব নেতারা। রিয়াদের কূটনৈতিক ও সরকারি সূত্র এ বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজার ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের উচ্ছেদের যেকোনো উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সৌদি আরবে আরব নেতারা একত্রিত হচ্ছেন।
খবরে বলা হয়, বৈঠকে ফিলিস্তিন নিয়ে খসড়া নানা প্রস্তাব আলোচনা হতে পারে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতৃত্বে ফিলিস্তিন পুনর্গঠন তহবিল গঠন। এ ছাড়া হামাসকে পাশ কাটিয়ে একটি নতুন শাসন কাঠামো ঠিক করা। তবে বৈঠকের মূল বিষয় থাকবে গাজার বাসিন্দাদের তাদের ভূমি থেকে না সরিয়ে কীভাবে পুনর্গঠন কাজ শুরু করা যায় তা নিয়ে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিকল্পনা আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিরল ঐক্যের সূত্রপাত করেছে। তারা ট্রাম্পের এই ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড কে শাসন করবে এবং পুনর্গঠনের জন্য কে অর্থ প্রদান করবেন তা নিয়ে এখনো তাদের মধ্যে মতানৈক্য হতে পারে।
সৌদি পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ উমর করিম এএফপিকে বলেন, বৃহত্তর আরব বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক এবং ফিলিস্তিনি ইস্যুর ক্ষেত্রে এই শীর্ষ সম্মেলন হবে কয়েক দশকের মধ্যে ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’। গাজা উপত্যকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখলে নেয়ার এবং সেখানে বসবাসকারী ২৪ লাখ গাজাবাসীকে প্রতিবেশী মিশর ও জর্ডানে স্থানান্তরিত করার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প আন্তর্জাতিক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছেন।
সৌদি সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, আরব নেতারা ‘গাজার জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিপরীতে একটি পুনর্গঠন পরিকল্পনা’ নিয়ে আলোচনা করবেন।
১১ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎকালে জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বলেন, মিশর একটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে। সৌদি সূত্রটি জানিয়েছে, বাদশাহ উল্লিখিত মিসরীয় পরিকল্পনাটি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হবে।
আজ শীর্ষ সম্মেলনে মূলত সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং জর্ডানের অংশগ্রহনের পরিকল্পনা ছিল। তবে, সম্মেলনটিতে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি)-এর অন্তর্ভূক্ত ছয়টি দেশের সব ক’টিকে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে সম্প্রসারিত করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের জন্য, গাজা থেকে তাদের জোর করে প্রত্যাহারের যেকোনো প্রচেষ্টাকে আরব বিশ্ব ‘নাকবা’ বা বিপর্যয় বলে অভিহিত করেছে।
একুশে সংবাদ/ক.ব/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :