গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে নতুন দফা আলোচনার জন্য সোমবার দোহায় একটি প্রতিনিধিদল পাঠাবে ইসরাইল। হামাসের ওপর চাপ বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ গত ১ মার্চ শেষ হয়। পরবর্তী ধাপগুলোর বিষয়ে, যা যুদ্ধের স্থায়ী অবসান নিশ্চিত করতে পারে, কোনও চুক্তি না হলেও, উভয় পক্ষই তখন থেকে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ পুনরায় শুরু করা থেকে বিরত রয়েছে।যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য দ্বিতীয় পর্যায়ের শর্তাবলী নিয়ে এখনও উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। তারপরও ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে ইসরাইলে হামাসের আক্রমণের পর থেকে সহিংসতাকে মূলত থামিয়ে দিয়েছে।
হামাস বারবার পরবর্তী পর্যায়ের জন্য তাৎক্ষণিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।এবং ইসরাইল বর্তমানের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে।এই অচলাবস্থার মধ্যে ইসরাইল গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে এবং রোববার ঘোষণা করেছে যে তারা হামাসকে জিম্মিদের মুক্তি দিতে বাধ্য করার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়ার সময় জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন বলেন, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে এবং যুদ্ধের পরে হামাস যাতে আর গাজায় না থাকে তা নিশ্চিত করতে আমাদের হাতে থাকা সমস্ত সরঞ্জাম ব্যবহার করা হবে।
ইসরাইল এবং গাজার মধ্যে একমাত্র বিদ্যুৎ লাইন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের প্রধান লবণাক্তমুক্তকরণ কেন্দ্রে সরবরাহ করে এবং গাজার বাসিন্দারা এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মূলত সৌর প্যানেল এবং জ্বালানি চালিত জেনারেটরের উপর নির্ভর করে।
গাজা জুড়ে লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনি এখন তাঁবুতে বাস করছে, যেখানে রাতের তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়।
হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ইজ্জত আল-রিশক বলেছেন, ‘গাজাকে খাদ্য, ওষুধ এবং পানি থেকে বঞ্চিত করার পর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ইসরাইলি সিদ্ধান্ত’ ‘আমাদের জনগণ এবং তাদের প্রতিরোধের ওপর চাপ সৃষ্টির একটি মরিয়া প্রচেষ্টা’।
মুখপাত্র হাজেম কাসেম এএফপিকে বলেন, হামাস চায় মধ্যস্থতাকারীরা নিশ্চিত করুক যে ইসরাইল ‘চুক্তি মেনে চলছে... এবং সম্মত শর্তাবলী অনুসারে দ্বিতীয় পর্যায়ে এগিয়ে যাচ্ছে’।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় অবশিষ্ট সমস্ত ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহারের সাথে জড়িত দ্বিতীয় পর্যায়ের রূপরেখা দিয়েছিলেন।
হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সপ্তাহান্তে কায়রোতে হামাস প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতাকারীদের সাথে দেখা করেছেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যাডাম বোহলার, যিনি সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হামাস কর্মকর্তাদের সাথে অভূতপূর্ব সরাসরি আলোচনা করেছেন। তিনি রোববার বলেছেন যে বাকি সমস্ত জিম্মিকে মুক্ত করার জন্য ’কয়েক সপ্তাহের মধ্যে’ একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যেতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার সময় যে ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ৫৮ জন এখনও গাজায় বন্দী, যার মধ্যে ৩৪ জন ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :