AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কাকে ঠেকাতে পারমাণবিক অস্ত্র পেতে মরিয়া পোল্যান্ড?


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৩:০৯ পিএম, ১৬ মার্চ, ২০২৫
কাকে ঠেকাতে পারমাণবিক অস্ত্র পেতে মরিয়া পোল্যান্ড?

রাশিয়ার অব্যাহত হুমকি মোকাবিলায় সামরিক শক্তি বাড়াতে চায় পোল্যান্ড। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক গত শুক্রবার পার্লামেন্টে ঘোষণা দেন, "আমরা ৫ লাখ সৈন্যের সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে চাই। প্রতিটি পুরুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, পাশাপাশি আমরা পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতাও চাই।"

পোল্যান্ড এমন সময়ে প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। এই ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন পোল্যান্ডের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

টাস্ক বলেন, ‘ফ্রান্সের পরমাণু শক্তি আমাদের সুরক্ষা দিতে পারে কি না, সে ব্যাপারে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। প্রেসিডেন্ট মাখোঁও এ ব্যাপারে উদার দৃষ্টিভঙ্গি দেখাচ্ছেন। তিনি ইউরোপকে সুরক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে ফ্রান্সের পারমাণবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করতে পারে, সেই আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করেছেন।’

প্রচলিত অস্ত্রের মধ্যে পোল্যান্ডকে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত হবে না বলে মনে করছেন টাস্ক। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রচলিত অস্ত্রের পাশাপাশি অত্যাধুনিক অস্ত্রের দিক থেকেও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সব সময় যে যুদ্ধের জন্যই এটি করতে হবে, তা নয়। নিরাপত্তার প্রয়োজনেই এটি করতে হবে। কারণ নিরাপত্তা সক্ষমতা অর্জন করাও একটি প্রতিযোগিতা। আমরা সেই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে থাকতে পারি না।’

টাস্ক ইউক্রেনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনের পারমাণবিক অস্ত্রাগার থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার হামলার শিকার হতে হচ্ছে। ফলে আমাদের বসে থাকলে চলবে না। পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীরও ব্যাপক উন্নয়ন করতে হবে।’

এরপর টাস্ক বলেন, ‘এ বছরের শেষের দিকে আমরা এমন একটি মডেল তৈরি করতে চাই, যার মাধ্যমে পোল্যান্ডের প্রতিটি প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষকে যুদ্ধ–প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আমরা রাশিয়ার হুমকি মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত সৈন্য রিজার্ভ রাখতে চাই।’

বর্তমানে পোল্যান্ড সেনাবাহিনীতে ২ লাখ সৈন্য রয়েছে। এটি ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী। সংখ্যার দিক থেকে এর আগে রয়েছে মাত্র দুটি দেশ—যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক। অন্যদিকে ইউক্রেনের রয়েছে ৮ লাখ সেনাসদস্য। আর রাশিয়ার রয়েছে ১৩ লাখ সৈন্য।

রাশিয়ার এই বিপুল সৈন্য সংখ্যাই পোল্যান্ডের মাথাব্যথার কারণ। এর সঙ্গে আবার জোট পাকাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে বৈকি।

তবে রাশিয়া যতই ভয় দেখাক, টাস্ক স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, পোল্যান্ড কখনোই ন্যাটো ছেড়ে যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যতটা সম্পর্ক রাখা সম্ভব, ততটা রাখার চেষ্টা করবে পোল্যান্ড।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘ন্যাটোর শীর্ষ ব্যয়কারী দেশের একটি পোল্যান্ড। তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এটি ৫ শতাংশে উন্নীত করা উচিত বলে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্টই মনে করছেন।’

পোল্যান্ড অস্ত্রের জন্য কোটি কোটি অর্থ ব্যয় করছে। তার রয়েছে আমেরিকান আব্রাম ট্যাংক, প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান, দক্ষিণ কোরিয়ার কে–২ ব্ল্যাক প্যান্থার যুদ্ধ ট্যাংক, কে৯এ১ থান্ডার হাউটজার, হোমার–কে রকেট সিস্টেম এবং যুদ্ধবিমানের প্রতিক্ষক।

পোল্যান্ডের নিরাপত্তাব্যবস্থা অনেকটাই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে এখনো ১০ হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে যুদ্ধাস্ত্রও কিনে থাকে পোল্যান্ড। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন যেসব ইঙ্গিত দিচ্ছে, তা পোল্যান্ডের জন্য উদ্বেগজনক।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডা হয়েছে। এরপর ইউক্রেনে সহায়তা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন ট্রাম্প। এরপর ন্যাটোকেও এক হাত নিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, ন্যাটোর দেশগুলো প্রতিরক্ষাখাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে না। এই অবস্থা যদি চলতে থাকে, তাহলে ন্যাটোর কোনো দেশের ওপর আক্রমণ হলে তার পাশে দাঁড়ানোর যুক্তরাষ্ট্রের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেটি পূরণ করবেন না তিনি।

ট্রাম্পের এ ধরনের আচরণই মূলত পোল্যান্ডের মাথাব্যথার কারণ। টাস্ক পার্লামেন্টে বলেন, ‘ইউক্রেন সম্পর্কে মার্কিন নীতির গভীর পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ব্যাপারটি হয়তো আমাদের পছন্দ নয়, তাই বলে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি না। তবে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের স্বার্থে কতটুকু অবদান রাখে, সেটি মূল্যায়ন করে সততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের।’

রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অর্থনৈতিক সক্ষমতা ইউরোপের আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। টাস্ক বলেন, ‘আমাদের শুধু ইচ্ছার অভাব এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব। আমরা কখনো কখনো কাপুরুষের মতো আচরণ করি। কিন্তু আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, ইউরোপের কাছে রাশিয়া অসহায় হতে বাধ্য।’

টাস্ক বলেন, ‘আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, ১৪ কোটি রাশানদের কাছ থেকে রক্ষা পেতে ৫০ কোটি ইউরোপীয় ৩০ কোটি আমেরিকানের কাছে সাহায্য ভিক্ষা চাইছে। অথচ ১৪ কোটির রাশিয়া গত তিন বছর ধরে ৫ কোটি ইউক্রেনীয়কে পরাজিত করতে পারেনি।’

পোল্যান্ডকে শক্তিশালী করতে ল্যান্ডমাইন ও গুচ্ছ অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকেও পোল্যান্ড সরে আসবে বলে জানান টাস্ক। তিনি আরও বলেন, ‘পোল্যান্ডের কাজ হচ্ছে পূর্ব সীমান্ত পাহারা দেওয়া, যেটি ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও সীমান্ত।’

 

একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস

Link copied!