সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত ৮০ হাজার পৃষ্ঠার গোপন নথি প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার এসব নথি প্রকাশ করা হয়। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন, যা দীর্ঘ সময় ধরে রহস্যঘেরা ছিল।
সোমবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, সত্য জানতে সবাই দশকের পর দশক অপেক্ষা করে আছেন। এর আগে দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। সে আদেশে কেনেডি ও তাঁর ভাই রবার্ট কেনেডি এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হত্যা-সংশ্লিষ্ট নথিপত্র প্রকাশের পরিকল্পনা পেশ করতে ফেডারেল সরকারকে নির্দেশ দেন তিনি।
গত ফেব্রুয়ারিতে এফবিআই জানায়, আমেরিকার ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা নতুন কয়েক হাজার নথি পেয়েছে। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাসে কেনেডিকে হত্যা করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, নতুন করে এই নথি প্রকাশ হতেই আলোচনায় উঠে এসেছেন গ্যারি আন্ডারহিল নামক এক ব্যক্তি। কে তিনি? এই গ্যারি আন্ডারহিলের মৃত্যু ঘিরে রহস্যও এই ফাইল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই উঠে এসেছে আলোচনায়।
জানা যায়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই গ্যারি। কেউ বলেন, গ্যারি নিজেই সিআইএ এজেন্ট ছিলেন। তথ্য বলছে, গ্যারি অভিযোগ তুলেছিলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জে এফ কেনেডির মৃত্যুর নেপথ্যে এই এজেন্সি রয়েছে।
প্রকাশিত ফাইলে ইঙ্গিত রয়েছে, এই অভিযোগ করার পরই নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন গ্যারি। এফবিআইয়ের প্রকাশিত মেমোর রিপোর্টের অংশে বলা হয়েছে, ‘হত্যাকাণ্ডের পরদিন গ্যারি আন্ডারহিল তড়িঘড়ি করে ওয়াশিংটন ছেড়ে চলে যান। সেদিন সন্ধ্যার দিকে তাঁকে নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। তিনি খুবই উত্তেজিত ছিলেন।’
নতুন নথিতে দাবি করা হচ্ছে, বন্ধু শার্লিন ফিটসিমনসকে আন্ডারহিল জানিয়েছিলেন, সিআইএর একাংশ জে এফ কেনেডিকে হত্যায় জড়িত। রিপোর্টে রয়েছে, ‘তিনি গোপনে জানান, সিআইএর একটি ছোট চক্র এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ছিল এবং তিনি তাঁর জীবন নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন এবং সম্ভবত দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে–এমন ভয় পাচ্ছিলেন।’
এদিকে, ঘটনার ৬ মাস পর আন্ডারহিলের মৃত্যু হয়, যা ঘিরে রহস্যের শেষ নেই। শেষ নেই প্রশ্নেরও।
সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট আরও বলছে, ছয় মাসের কম সময়ের মধ্যে আন্ডারহিলকে তাঁর ওয়াশিংটনের অ্যাপার্টমেন্টে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এটিকে আত্মহত্যা বলে রায় দেওয়া হয়। রিপোর্ট বলছে, আন্ডারহিল মৃত্যুর কিছুদিন আগে তাঁর বন্ধুদের বলেছিলেন, ‘আমি জানি ওরা কারা। এটাই সমস্যা। ওরা জানে যে আমি জানি। এই কারণেই আমি এখানে। আমি নিউইয়র্কে থাকতে পারব না।’
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :