ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ব্যর্থ হওয়ার পর ফের অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে হামলার তীব্রতা। এই হামলায় আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে চিকিৎসাসেবা প্রায় অচল হয়ে পড়ায় আহতরা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, যার ফলে মৃত্যুর মিছিলে প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছেন নতুন নাম।
সোমবার (৭ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার দেইর আল-বালাহ অঞ্চলের পাঁচটি এলাকার বাসিন্দাদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর সেখানে নতুন করে ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালানো হয়েছে। এতে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
এর আগের দিন রোববার গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।
বিভিন্ন অঞ্চলে হতাহতের চিত্রঃ
আল-নাখিল স্ট্রিট (গাজার পূর্বাঞ্চল): কামানের গোলায় আট শিশুসহ ১০ জন নিহত।
দেইর আল-বালাহ: বিমান হামলায় ৫ জন নিহত।
শুজাইয়া পাড়া (গাজা শহর): বিমান হামলায় ৩ জন নিহত।
জেইতুন পাড়া: বাড়িতে হামলায় ২ জন নিহত, বহু আহত।
সালাম পাড়া (জাবালিয়া): কামানের গোলায় ৪ জন নিহত।
জাওয়াইদা (কেন্দ্রীয় গাজা): বাস্তুচ্যুত শিবিরে ড্রোন হামলায় ১ জন নিহত।
খান ইউনিস (দক্ষিণ গাজা): বাড়িতে বিমান হামলায় ৮ জন নিহত।
কিজান রাসওয়ান, খান ইউনিস: বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলায় ১ জন নিহত।
আল-মাওয়াসি, খান ইউনিস: আশ্রয়কেন্দ্রে গুলিবর্ষণে ১ শিশু নিহত।
আবাসন আল-কাবিরা: কামানের গোলায় ১ জন নিহত, ৪ জন আহত।
মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে হাজারের গণ্ডি
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জন।
অন্যদিকে, গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৬২ হাজারের বেশি। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজার হাজার মানুষকেও মৃত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
নেতানিয়াহুর হুমকি
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামলা আরও জোরদারের ঘোষণা দেন। একই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
একুশে সংবাদ/আ.ট//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :