সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বিনাদোষে আরও ১৫ মাস মৌলভীবাজার কারাগারে থাকা ভারতীয় কিশোর রোহি দাস ফিরলো মায়ের কাছে। একটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর জামিন দেয় হাইকোর্ট।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে বিএসএফের কাছে তাকে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
গত ১৪ ডিসেম্বর বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোহি দাসকে দ্রুত মুক্তি দিতে রায় প্রকাশ করেন।
এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর ভারতীয় এই যুবককে নিয়ে সংবাদ প্রচার করে এক গণমাধ্যম। এরপর গত ১০ ডিসেম্বরগণমাধ্যমের সংবাদ সংযোজন করে আইনজীবী বিভূতি তরফদার ভারতীয় কিশোর রোহিদাস সরকারকে হাইকোর্টে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করে। একই সঙ্গে তাকে তার মায়ের কাছে ফেরত দিতেও নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরে ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি শেষে রোহি দাসকে দ্রুত ভারতে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
জানা গেছে, মায়ের সঙ্গে রাগ করে গত বছরের ৩ জুন ভুল করে বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে পড়ে রোহি দাস। পরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) তাকে আটক করে। আদালত ভারতীয় কিশোরকে ৩ মাস ২০ দিনের কারাদণ্ড দেন।
তবে আদালত সাজা দেয়ার আগেই অর্থাৎ যে তারিখে ঘোষণা করা হয়, এর আগেই খাটার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ফলে আদালত তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
গণমাধ্যমটির তদন্তে খুঁজে পাওয়া যায় ওই যুবকের পরিবারকে। খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায় তার বাবা দুলাল সরকার ও মা প্রমিলা সরকারকে। সন্তান বিনা দোষে বাংলাদেশে জেল খাটছে এমন প্রশ্নে মুষড়ে পড়েন তারা। যেকোনো উপায়ে সন্তান ফেরত চান এই দম্পতি।
বাবা দুলাল সরকার জানান, তার ছেলে বাংলাদেশে আটক হয়েছেন শুনে ভারতের বিএসএফের কাছে তিনি দরখাস্ত দিয়েছিলেন। এরপর স্থানীয় পুলিশকে জানালে, তাদের পক্ষ থেকে কয়েকবার খোঁজখবর নেয়া হয়। কিন্তু তারা এখনও কিছুই জানায়নি।
আর আটক রোহিদাসের মা ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, `কি দোষে আমার ছেলেকে এতদিন আটক রাখা হলো। আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই`।
১৫ মাস বিনা দোষে জেল খাটার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি এ বিষয়ে জানিয়েছিলেন, সব নথি হাতে পেলে, আইজি প্রিজনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে আটক কিশোরকে মুক্ত করে মায়ের কাছে ফেরত দেয়ার চেষ্টা করা হবে।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :