ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর রহমান ফকির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (০২ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৬ জুন মোস্তাফিজসহ দুজনকে চট্টগ্রামের ভোজপুর থানাধীন শ্রী শী মা পাতাল কালি মন্দির থেকে আটকের কথা জানায় ডিবি। পরদিন তাদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ডিবি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামি ফয়সাল আলী সাহাজী ওরফে সাজী।
এ মামলায় আগে গ্রেপ্তার চারজন আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। এর মধ্যে গত ৩ জুন আসামি শিলাস্তি রহমান, ৪ জুন তানভীর ভূঁইয়া, ৫ জুন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া এবং গত ১৪ জুন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু উক্ত মামলার ঘটনার সহিত জড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন করেন।
এছাড়া ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে গত ১৩ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৬ জুন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
মামলার এজাহারে তিনি বলেন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। গত ১১ মে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই।
গত ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। আমি পরে ফোন দেব। ’
এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।
মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন আরও উল্লেখ করেন, বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে বাবাকে অপহরণ করেছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :