বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ১১ জন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, এই আবেদনের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, যা মানবতাবিরোধী অপরাধসহ একাধিক ফৌজদারি মামলার ভিত্তিতে জারি হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ চাওয়া হয়েছে:
১. শেখ হাসিনা – সাবেক প্রধানমন্ত্রী
২. ওবায়দুল কাদের – আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
৩. আসাদুজ্জামান খান – সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
৪. আ ক ম মোজাম্মেল হক – সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী
৫. হাছান মাহমুদ – সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৬. জাহাঙ্গীর কবির নানক – সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
৭. মহিবুল হাসান চৌধুরী – সাবেক শিক্ষামন্ত্রী
৮. শেখ ফজলে নূর তাপস – ডিএসসিসির সাবেক মেয়র
৯. মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক – প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা
১০. নসরুল হামিদ – সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
১১. মোহাম্মদ আলী আরাফাত – সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী
১২. বেনজীর আহমেদ – সাবেক আইজিপি
এর মধ্যে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে প্রথম রেড নোটিশ জারির আবেদন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে আরও দুই ধাপে বাকি ১১ জনের বিরুদ্ধে আবেদন জমা দেওয়া হয়, সর্বশেষটি করা হয় ১০ এপ্রিল।
পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, আদালত, প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার অনুরোধের ভিত্তিতে এনসিবি ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করে। সংশ্লিষ্ট ১২ জনের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই বাংলাদেশের আদালত থেকে মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, রেড নোটিশের আবেদনপত্রে অভিযুক্তদের অবস্থান, পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য, মামলার বিবরণ ও আদালতের ওয়ারেন্ট সংযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনো সেখানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকায় তাকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে আবেদন করেছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি মামলা চলমান রয়েছে, যার তদন্ত এখন শেষ পর্যায়ে, এবং আগামীকাল (রোববার) তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।
ইন্টারপোল সাধারণত বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের অবস্থান শনাক্ত করতে সহযোগিতা করে। রেড নোটিশ জারি হলে সদস্য দেশগুলো অভিযুক্তদের ধরতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এনসিবির আবেদনের ভিত্তিতে এখন বিষয়টি ইন্টারপোলে প্রক্রিয়াধীন, এবং তা যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ// চ.ট//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :