সরকারি চাকরিজীবীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার সুযোগ পাবেন বলে রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এতে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপকৃত হবেন।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় দেন। রিটকারীদের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই রায়ের মাধ্যমে হাইকোর্টের পূর্বের একটি রায় বহাল থাকল না, যেখানে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরিপত্রে বলা হয়েছিল, যারা একাধিক টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন, তারা নতুন পে-স্কেলে উচ্চতর গ্রেড পাবেন না।
২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জারিকৃত অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়— কোনো সরকারি কর্মচারী একাধিক টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকলে তিনি নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী উচ্চতর গ্রেডের সুবিধা পাবেন না। শুধু একটি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরা এই সুযোগ পাবেন।
এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সংক্ষুব্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা রিট করেন, যার প্রেক্ষিতে এখন আপিল বিভাগ তাদের পক্ষে রায় দিল।
বর্তমান পে-স্কেল অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী একই পদে ১০ বছর চাকরি করলে এবং পদোন্নতি না পেলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন— একটি ১১তম বছরে, অপরটি ১৭তম বছরে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় এই সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পাওয়া থাকলে সেই সুযোগ বাতিল করা হয়েছিল।
তবে আপিল বিভাগের রায়ের ফলে এখন টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এতে করে দীর্ঘদিন পদোন্নতি না পাওয়া বহু সরকারি চাকরিজীবীর আর্থিক সুযোগ বাড়বে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, মূল পে-স্কেলে উচ্চতর গ্রেডের বিধান থাকলেও বাস্তবায়নপন্থা স্পষ্ট না থাকায় পরিপত্র দিয়ে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাখ্যার কারণে বহু চাকরিজীবী আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। আপিল বিভাগের রায়ের ফলে এখন সেই জটিলতা দূর হলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রায় সরকারি চাকরিতে পদোন্নতিবঞ্চিতদের দীর্ঘদিনের আর্থিক বৈষম্য দূর করতে সহায়ক হবে এবং মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি আনবে।
একুশে সংবাদ// আ.ট//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :