ভিটামিন সি থেকে প্রোটিন- ছয় ধরনের পুষ্টি উপাদান খাদ্যাভ্যাসে রাখা উচিত। ভিটামিন সি যুক্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ভিটামিন সি দেহের এমন কিছু প্রাণরাসায়নিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত, যার সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সম্পর্ক রয়েছে।
শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে নানান রকম খনিজ উপাদান বের হয়ে যায়, পাশাপাশি দেখা দেয় পানিশূন্যতা।তাই গরমে সুস্থ থাকতে সুষম খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করা প্রয়োজন।তাপমাত্রার বৃদ্ধির সাথে সাথে দেহে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরালো রাখার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর দিতে হয়।
ভারতের প্রত্যয়িত পুষ্টিবিদ ডা. রোহিনি পাতিল, গরমে সুস্থ থাকতে উপকারী অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান গ্রহণের পরামর্শ দেন।তিনি বলেন, “রোদের কারণে দেহে পানিশূন্যতা ও পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। কেবল উদরপূর্তি নয় বরং এই সময়ে সুস্থ থাকতে ও দেহকোষ সতেজ রাখতে সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন রয়েছে।”
ভিটামিন সি
ত্বক ভালো রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি উপকারী। গরমকালে ত্বক অনেক বেশি সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসে, ফলে ফ্রি রেডিকেল উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আর অক্সিডেটিভ চাপ বাড়ে।ভিটামিন সি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে- লেবু, আঙুর, টমেটো, আলু, স্ট্রবেরি, ব্রকলি, পেঁপে।
ম্যাগনেসিয়াম
পেশি ও স্নায়ুর কার্যকারিতার ভারসাম্য বজায় রাখতে ম্যাগনেসিয়াম উপকারী। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সহায়তা করে। গরমের মাসগুলোতে ঘাম বেশি হয়। শারীরিক কার্যকরিতা বাড়ে। ফলে দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।ম্যাগনেসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রোলাইট যা দেহে তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই গরমকালে ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ কয়েকটি খাবার হল- চিয়া বীজ, কাঠবাদাম, পালংশাক, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, সয়া দুধ, ডার্ক চকলেট।
পটাসিয়াম
ম্যাগনেসিয়ামের মতো পটাসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রোলাইট যা দেহের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং পেশি ও স্নায়ুর কার্যকারিতা বজায় রাখে।ঘামের কারণে দেহ থেকে পটাসিয়াম হ্রাস পায় এর ফলে পেশিতে ব্যথা, দুর্বলভাব ও ক্লান্তি অনুভূত হয়। পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে দেহের হারিয়ে যাওয়া ইলেকট্রোলাইট পুনরুদ্ধার করা যায়। পটাসিয়াম সমৃদ্ধ কয়েকটি খাবার হল- মটর, ডাল, ব্রকলি, অ্যাভোকাডো, কলা, শুকনো ফল যেমন- কিশমিশ।
জিংক
মন একটি খনিজ উপাদান যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায়, ক্ষত সারাতে এবং ডিএনএ সংশ্লেষে ভূমিকা রাখে।গরমকালে নানা ধরনের সংক্রমণ দেখা দেয়। কারণ ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এই সময়ে সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করা প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং দুর্বলতা কমাতে পর্যাপ্ত জিংক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। জিংক সমৃদ্ধ কয়েকটি খাবার হল- কর্নফ্লেক্স, দই, কাজুবাদাম, বাদাম, সম্পূর্ণ শস্য, কুমড়ার বীজ।
প্রোটিন
দেহের প্রতিটি কোষ-পেশি, হাড়, হরমোন এবং অ্যান্টিবডি এসব কিছুই প্রোটিনের তৈরি। মানে হল দেহ সচল রাখতে প্রোটিনের প্রয়োজন। দেহ বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য বিশেষত শিশু, কিশোর ও গর্ভবতীদের প্রোটিন গ্রহণ করা আবশ্যক। প্রোটিন সমৃদ্ধ কয়েকটি খাবার হল- সামুদ্রিক মাছ, ডিম, দুধের তৈরি খাবার, মটর ও ডাল, বীজ ও বাদাম।
পানি
কেবল আর্দ্র থাকতেই নয় বরং গরমে খাদ্যাভ্যাসের অন্যতম অংশ হল পানি। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকা, ঘাম হওয়া ইত্যাদি কারণে দেহে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। পর্যাপ্ত পানি পান দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখে, পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমায়, হজম ক্রিয়া উন্নত করে এবং ত্বক সুস্থ রাখে। দৈনিক আট থেকে ১০ গ্লাস পানি পান এবং জলীয় উপাদান সমৃদ্ধ খাবার যেমন- তরমুজ, শসা ও টক ধরনের ফল দেহ আর্দ্র রাখতে সহায়তা করে।
একুশে সংবাদ/বি.নি.টু/সাএ
আপনার মতামত লিখুন :