রমজান মাস পবিত্রতা ও সংযমের মাস। রোজায় আমাদের জীবনযাত্রা এবং খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আসে। ইফতারে রাখা হয় হরেক রকমের খাবার। অনেক সময় দেখা যায় অনেকের রোজায় ফুড পয়জনিং বা খাদ্য বিষক্রিয়ার সমস্যা হয়। হেলথলাইনের প্রতিবেদনে ফুড পয়জনিং এর বিস্তায়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
অনেক সময় দেখা যায় হুট করেই বমি, পাতলা পায়খানা, জ্বর, পেটব্যথা শুরু হয়। যদি কোনো খাবার খেয়ে এমন হয় তাহলে বুঝবেন ফুড পয়জনিং। রোজায় অনেকেই ফুড পয়জনিং-এ ভোগেন। অস্বাস্থ্যকর, দূষিত খাবার খাওয়ার কারণে এই সমস্যা হয়। সাধারণত এটি বিপজ্জনক নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর হতে পারে। খাদ্য বিষক্রিয়ার প্রধান লক্ষণ হল পেট ব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়া।
লক্ষণ: খাদ্য বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলো সাধারণত অনেকটা স্পষ্ট হয়। এর মধ্যে পেটের ব্যথা, বমি, এবং ডায়রিয়া সবচেয়ে সাধারণ। এছাড়াও ক্ষুধামন্দা, মৃদু জ্বর, দুর্বলতা, মাথাব্যথা। তবে যদি তিন দিনের বেশি ডায়রিয়া থাকে তাহলে সাবধান। অন্যদিকে, ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যদি ১০১ দশমিক ৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি জ্বর, তিন দিনের বেশি ডায়রিয়া, তীব্র পানিশূন্যতা, দৃষ্টি ঝাপসা, চেতনা কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ থাকে।
যে কারণে ফুড পয়জনিং হয়
সাধারণত বাসি-পচা, অস্বাস্থ্যকর ও জীবাণুযুক্ত খাবার এবং অনেকক্ষণ গরমে থাকার ফলে নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার খেলে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গরম বা অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরের ভেতরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। এ জন্য অনেকেই রাস্তার তৈরি শরবত খেয়ে ফেলে। এ থেকে ফুড পয়জনিং হতে পারে। কেননা, রাস্তাঘাটের খাবার বেশির ভাগ সময় পরিষ্কার থাকে না।
গরমে ঘরের খাবারও যদি অনেকক্ষণ ধরে বাইরে রাখা থাকে, তাহলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ থেকেও ফুড পয়জনিং হতে পারে।
খাওয়ার আগে হাত ভালো করে না ধুলেও এই সমস্যা হতে পারে।
খাবারের জন্য ব্যবহৃত থালাবাটি ভালোভাবে না ধোয়ার ফলে এ সমস্যা হতে পারে।
আক্রান্ত হলে ডাবের পানি, স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আক্রান্ত হলে ডাবের পানি, স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ফুড পয়জনিং হলে চিকিৎসা: আক্রান্ত হলে ডাবের পানি, স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগী যদি মুখে না খেতে পারে এবং অবস্থা যদি খুব জটিল হয়, তবে চিকিৎসকেরা শিরার মাধ্যমে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। কিছু রোগীর বেলায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফুড পয়জনিং রোধে নিজের সচেতনতাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। কোনো ভাবেই ফুড পয়জনিং হলে স্বাভাবিক ভেবে ঘরে বসে থাকা জানে না। অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালে যেতে হবে। বিশেষ করে ১০১ দশমিক ৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি জ্বর এবং পানিশুন্যতা হলে সময় নষ্ট করা যাবে না।
ফুড পয়জনিং হলে যেসব খাবার খাওয়া যাবে না:
দুগ্ধজাত পণ্য
তেলঝোল খাবার
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার
মিষ্টি এবং ঝাল খাবার
ফুড পয়জনিং প্রতিরোধ: ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে কিছু কৌশল মানতে বলছেন চিকিৎসকরা।
এগুলো হলো:
সবসময় হাত ধুয়ে খাবার তৈরি করা এবং খাওয়া
মাংস এবং ডিম ভালোভাবে রান্না করুন
কাঁচা ফলমূল ও শাকসবজি ভালোভাবে ধুয়ে ব্যবহার করুন
এই নিয়মগুলো মেনে চললে খাদ্য বিষক্রিয়া থেকে অনেকাংশে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :