চার দিনের জাপান সফরের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
সফরের দ্বিতীয় দিন স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ এপিল) সকালে জাপানের রাজধানী টোকিওর আকাসাকা প্যালেস স্টেট গেস্ট হাউসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সিইওরা।
প্রথমেই দেখা করেন বাংলাদেশ-জাপান কমিটি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশনের চেয়ারম্যান ফুমিও কুকোবু। এরপর সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাইকা প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকো। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা।
পরে স্টেট গেস্ট হাউসেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন জেট্রো’র চেয়ারম্যান ইশিগুরো নোরিহিকো। পাশাপাশি ছিলেন জাপান- বাংলাদেশ পার্লামেন্টরি ফ্রেন্ডশিপ লীগের প্রেসিডেন্ট তারো আসো। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৫টার দিকে টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই সানসুকে ও জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাহাবুদ্দিন আহমেদ অভ্যর্থনা জানান। এ সময় জাপান সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে টোকিও পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে তাকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে আকাসাকা প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয়। জাপান সফরকালে সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি।
এই সফরে টোকিওর সঙ্গে ৮টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সোমবার (২৫ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর (বাংলাদেশ ও জাপান) উপস্থিতিতে উভয় দেশের মধ্যে আটটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
মোমেন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ এপ্রিল জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একই দিন চুক্তি স্বাক্ষরের পর তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নৈশভোজের মাধ্যমে বৈঠকটি শেষ হবে।
জাপান সফরকালে শেখ হাসিনা একটি বিনিয়োগ সম্মেলন এবং প্রবাসী বাংলাদেশি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন। ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোকিওতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং জেট্রোর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও কমিউনিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। টোকিও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশির সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তিনি জাইকা, জেইটিআরও, জেইইআইসি, জেবিপিএফএল, জেবিসিসিইসির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকসহ আরও কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেবেন।
জাপানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘এনএইচকে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করবে।
টোকিও থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছে ১ মে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারত্ব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ৪ মে যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য কমনওয়েলথ দেশের রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার পত্নী ক্যামিলার রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য লন্ডনের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ত্যাগ করবেন। আগামী ৯ মে লন্ডন থেকে ঢাকা পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী।
একুশে সংবাদ.কম/স.ন.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :