রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের ওপর আগে হামলা করেছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধানের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, তিনি এমন তথ্য কোথায় পেয়েছেন জানি না।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে ডিএমপি সদর দফতরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বক্তব্যের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, হারুন এই কথা কোথায় পেয়েছেন এটা হারুন বলতে পারবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, একেবারে প্রাথমিক তদন্তের আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এডিসি হারুন ও ইনস্পেকটর মোস্তফা; দুজন ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করেছে। আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তারপর আমি একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরে আমাদের অফিসারদের কার কতটুকু দোষ, সেই অনুসারে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নেয়ার থাকলে আমরা পুলিশ সদর দপ্তর বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবো।
এর আগে এদিন দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের গোয়েন্দা শাখার প্রধান জানান, থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের নির্যাতনের যে ঘটনাটি ঘটেছে তার সূত্রপাত হয় বারডেম হাসপাতালে। সেখানে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন আগেই বরখাস্ত এডিসি হারুনের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। এ বিষয়টিও তদন্তে আসা উচিত।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে সংবাদমাধ্যমকে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন।
সানজিদা জানান, তার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনসহ আরও কয়েকজন প্রথমে এডিসি হারুনকে মারধর করেন।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন,সানজিদা অনুমতি ছাড়া মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। সানজিদার সঙ্গে আমি কথা বলিনি। সানজিদা এ ধরনের কোনো স্টেটমেন্ট দিয়ে ঠিক করেননি। কারণ কমিশনারের অনুমতি ছাড়া তিনি এভাবে স্টেটমেন্ট দিতে পারেন না।
৯ সেপ্টেম্বর রাতে শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে। এর জেরে ওইদিন রাতেই শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে মীমাংসা করেন। তবে ঘটনাটি আলোচনার জন্ম দেয়।
এ ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এডিসি হারুনকে রমনা বিভাগ থেকে সরিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দাঙ্গা দমন বা পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই দিন সন্ধ্যায় তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয় বলেও জানানো হয়। পরের দিন ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সবশেষ তাকে পুলিশের রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত থাকা অবস্থায় বিধি অনুযায়ী তিনি খোরপোষ ভাতা পাবেন।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :