ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশে শিক্ষা প্রসারের অভিযাত্রা বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। একটি জ্ঞান ভিত্তিক জাতি বিনির্মাণে যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েও তিনি ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় করণ এবং প্রযুক্তি শিক্ষার বিকাশে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এবং ২০০৯ থেকে অদ্যাবধি একটি জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় বিনা মূল্যে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক প্রদান, শিক্ষার অবকাঠামো তৈরিসহ শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে যুগান্তকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন। ইতোমধ্যেই দেশের সুবিধা বঞ্চিত অঞ্চলের ছেলে মেয়েদের ডাক ও টেলিযোাগযোগ বিভাগের উদ্যোগে সরকার এসওএফ তহবিলের অর্থায়নে ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে ২৮টি পাড়াকেন্দ্রে ডিজিটাল কনটেন্টের পাঠ দানের মাধ্যমে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। আরও এক হাজারটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ চলছে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলা সদরে আনন্দ মাল্টি মিডিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, তিতাস শাখার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ছাত্র , শিক্ষক ও অভিভাকদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রণীত ডিজিটাল কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশে ডিজিটাইজেশনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল যন্ত্রের বোতাম না টিপে এখন প্রশাসনিক কাজ থেকে শুরু করে জমির দলীল কিংবা রেলের টিকিট পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সন্তানদের ডিজিটাল শিক্ষা প্রদান প্রতিটি অভিভাবকের দায়িত্ব। স্কুল কলেজের পাঠ্যসূচির কাগজের বইকে শিশুদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্টে রূপান্তরের মাধ্যমে ডিজিটাল যন্ত্রের মাধ্যমে পাঠদান পদ্ধতিটি বৃটেনসহ উন্নত বিশ্বে অনেক আগে থেকেই চর্চা হচ্ছে।
ডিজিটাল স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজধানীর গুলশানে একটি বৃটিশ স্কুলে কম্পিউটারে পাঠদান আমাকে আলোড়িত করেছিল। বলা যেতে পারে ডিজিটাল স্কুল প্রতিষ্ঠার ধারণাটি আমি সেখান থেকেই গ্রহণ করি। তিনি বলেন, শিশুদেরকে ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন স্মার্ট নাগরিক হিসেব গড়ে তুলতে না পারলে স্মার্ট বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যাবে না। শিক্ষাকে কেবল ব্যবসায়ী দৃষ্টিকোন থেকে না দেখে সমাজ যা প্রত্যাশা করে তা পুরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি মন্ত্রী উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেবলমাত্র বিদ্যালয়ের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করা সহজ হবে না।
আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল ও কলেজ, তিতাস শাখার চেয়ারম্যান ড. সন্তোষ মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন, বিজয় ডিজিটাল এর সিইও জেসমিন জুই, তিতাস উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন আহমেদ এবং আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল ও কলেজ, তিতাস শাখার অধ্যক্ষ ইখতিয়ার উদ্দিন ইমন বক্তৃতা করেন।
ড. সন্তোষ মজুমদার আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল ও কলেজ পরিচালনায় তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে একটি শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠায় সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
বিজয় ডিজিটালের সিইও জেসমিন জুই শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ক তার উপস্থাপনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিশুদের মনন ও মেধা বিকাশ ঘটানো হোক শিক্ষার লক্ষ্য। শিক্ষার্থীদের ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল কারিগর আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক একটি দক্ষ জাতি বিনির্মাণ সম্ভব। তিনি প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম ডিজিটাল কনটেন্টে রূপান্তরে তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, স্মার্ট জাতি বিনির্মাণে স্মার্ট শি্ক্ষার বিকল্প নাই।
পরে মন্ত্রী আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল ও কলেজ, তিতাস শাখার ডিজিটাল কন্টেন্ট ব্যবহার ও পাঠদান পরিদর্শন করেন।
একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :