ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এক রাতে তিনটি মন্দিরের ১০টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার ওই যুবকের নাম সনাতন মালো ওরফে সোনাই মালো (৪৫)। তিনি আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের মৃত নিতাই মালোর ছেলে।
সোমবার(১৮.১২.২৩) দুপুর ১২টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের রাতে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত কুশুমদী মহল্লার কেন্দ্রীয় হরি মন্দির, শ্রী বিষ্ণু পাগলের মন্দির এবং ৭নং ওয়ার্ডে আলফাডাঙ্গা মহল্লার শ্রী শ্রী দামুদর আখড়া মন্দিরে ভাংচুর করা হয়।
এর মধ্যে হরি মন্দিরের দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, মনসা ও মহাদেব; বিষ্ণু পাগলের মন্দিরের মহাদেব ও মনসা এবং দামুদর আখড়া মন্দিরের মহাদেব, শিবলিঙ্গ ও নারায়ণ—১০টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। এ ব্যাপারে পরের দিন ১৭ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা থানায় একটি মামলা করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনার পরে বিষ্ণু পাগলের মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই রাতে ২টা ১৫ মিনিটের দিকে এক ব্যক্তি মন্দিরে প্রবেশ করে এবং রাত ২:৩৬ মিনিটের দিকে বের হয়ে আসে। পরে স্থানীয়দের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে তার নাম পরিচয় বেরিয়ে আসে। এরপর তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সোনাই মালোকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেফতারের পর আসামী সনাতন মালো এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সোনাই মালো বলে যে, সাপ তাকে দুই বছর যাবত স্বপ্নে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তাই তিনি বিভিন্ন পূজামন্ডপে যেসব মূর্তি ও প্রতিমার সাথে শিব বা মহাদেবের মূর্তি আছে সেগুলোর মুখমণ্ডল হাত দিয়ে ভেঙে ফেলেন। কারণ শিব বা মহাদেবের গলয়া সাপ জড়ানো থাকে। পাশাপাশি মূর্তির সাথে মাটির তৈরি যে সাপ থাকে সেগুলোও ভেঙে ফেলেন। সোনাই মালো আরো জানান, বিষ্ণু পাগলের মন্দিরে রক্ষিত দুর্গা, সরস্বতি, লক্ষ্মীর যে প্রতিমা আছে সেগুলো আসল না এবং তারাও সাপের রূপ ধারণ করে তাকে ভয় দেখায়। এ কারণে ওই মূর্তিগুলোর মুখ তিনি ভেঙে দেন।
এদিকে, এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার আলফাডাঙ্গা চৌরাস্তা এলাকায় মানববন্ধন করে উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ সনাতনী বিভিন্ন সংগঠন। এ ছাড়া গতকাল শনিবার রাতে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :