ধীরে ধীরে নগরবাসী অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন মেট্রোরেলে যাতায়াতে। এর ফলে প্রতিদিন চাপ বাড়ছে এই যানে। টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা আর বগির ভেতর চাপাচাপিতে অনেক সময় ভোগান্তি হলেও যাত্রীদের মনে দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর স্বস্তি।
তবে টিকিটের জন্য লাইনের ঝক্কির বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে অনেকে যাত্রী অভিযোগ করেছেন। তবে তাৎক্ষণিক তার প্রতিকার দিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছেন, টিকিট লাইনের অপেক্ষার সময় কমাবে এমআরটি পাস।
মেট্রোরেলে সহজে যাতায়াতের জন্য গত তিন দিনে প্রায় ২০ হাজার এমআরটি পাস কিনেছেন যাত্রীরা। আর যাত্রীদের ভিড় কমাতে মেট্রো ট্রেনের চলাচলের মধ্যবর্তী সময় কমানোর পাশাপাশি নতুন বগি বাড়ানোরও চিন্তা করছে কতৃপক্ষ। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কোম্পানি সচিব (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণমাধ্যমকে এমনটিই জানিয়েছেন।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, গত তিন দিনে আমাদের এমআরটি পাস কিনেছেন প্রায় ২০ হাজার লোক। ভিড় কমাতে আমাদের বগি বাড়ানোর চিন্তাও আছে। যে সিস্টেমে আছে সেখানে প্রত্যেক কোচে আরও দুটি বগি যুক্ত করতে পারবো। এছাড়া নতুন কোচ প্রয়োজন হলে ভাবা হবে। পাশাপাশি আমরা সার্ভে করে দেখবো মেট্রো ট্রেন চলাচলের মধ্যবর্তী সময়টা কতটা কমিয়ে আনা যায়।
জানা গেছে, সাধারণত রাজধানীতে পিক আওয়ার সকাল নয়টা ও বিকেল পাঁচটা। অফিস শুরু ও শেষের সময়কে কেন্দ্র করে সড়কে এ সময় তীব্র যানজট দেখা যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে নগরবাসীর আস্থায় পরিণত হয়েছে মেট্রোরেল। ফলে পিক আওয়ারে স্টেশনগুলোতে ভিড় দেখা যায়। মতিঝিল অংশ পর্যন্ত মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হওয়ার পর থেকে যাত্রীচাপ আরও বেড়েছে। তবে শুধু পিক আওয়ার না অন্য সময়গুলোতেও মেট্রোতে যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সচিবালয় স্টেশনে যাত্রীদের তীব্র চাপ চোখে পড়েছে। সেখানে মোট তিনটি মেশিন ও একটি ম্যানুয়াল বুথের সামনে শতাধিক যাত্রীকে টিকিটের জন্য লাইনে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া আগারগাঁও, পল্লবী স্টেশনের যাত্রীদের প্রচুর চাপ।
শুধু টিকিট কাটাই নয়, একই চিত্র মেট্রোতে উঠার সময়েও। টিকিট কাটলেও বগিতে উঠতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ-উৎকষ্ঠায় আছেন। সচিবালয়ের স্টেশনের যাত্রীরা উঠতে পারলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছার পর কোনো বগিতেই তিল ধরার ঠাঁই নেই। এ সময় অনেক যাত্রীকে এক বগির দরজা থেকে অন্য বগির দরজায় দৌঁড়াতে দেখা যায়।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানিয়েছেন, বেশি সংখ্যাক যাত্রীদের এমআরটি পাস সংগ্রহ এবং নতুন বগি যুক্ত হলে মেট্রোরেল হয়ে উঠবে আরো আরামদায়ক ভ্রমণের নাম।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে গত ৪ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন তিনি। গত ৩১ ডিসেম্বর সর্বশেষ মেট্রোরেলের শাহবাগ ও কারওয়ানবাজার স্টেশন চালু হয়। আর গত ২০ জানুয়ারি থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল অংশে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রোরেল।
মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন হলো— উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিল।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :