চাঁপাইনবাবগঞ্জের একমাত্র সরকারি পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের মূল কাজ এখনও শুরু হয়নি। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৫ বছরেরও বেশি সময়। কাজ শুরু নাহলেও সংশোধন হচ্ছে প্রকল্প, ব্যয় বাড়ছে দ্বিগুণ।
গণপূর্ত বিভাগ বলছে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় সংশোধন আনা হচ্ছে। ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে প্রায় ৫২ কোটি টাকা। প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সংশোধনের পর সব মিলিয়ে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি টাকায়। একনেকে অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি শেষ হতে সময় লাগবে আরও সাড়ে তিন বছর।
জানা যায়, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয় ২০১৭ সালে। এ জেলার পর্যটনের বিকাশে অর্ধশতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রকল্প এটি। শহরের অদূরে মহানন্দা নদীর উপর নির্মিত শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন এলাকায় ৪৪ একর জমির ওপর পর্যটকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয় ৪০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়- সেখানে হোটেল কমপ্লেক্স, বিনোদন ভ্রমণ, বাণিজ্যিক পর্যটন ও খেলাধুলাসহ নানা সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদচারণে মুখর হবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু করে শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের জুনে। তবে এখনও শুরু হয়নি প্রকল্পটির অবকাঠামো নির্মাণকাজ।
এদিকে, কয়েক বছরে শুধু সীমানা প্রাচীর নির্মাণ হয়েছে, চলছে ভূমি উন্নয়নের কাজ। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি শেষ না হওয়ায় বাড়ছে ব্যয়। সব মিলিয়ে প্রকল্পটির ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি টাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানসম্মত কোনো পর্যটনকেন্দ্র নেই। ছয় বছর আগে শেখ হাসিনা সেতু এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের খবরে সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছিল এলাকার মানুষ। তবে ছয় বছরেও প্রকল্পটির দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এটা হতাশার। আমরা চাই এই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হোক।
কলেজ পড়ুয়া যুবক মহব্বত আলী জানান, প্রকল্পটির এখন শুধু সীমানা প্রাচীর ও বালি ভরাট করা হয়েছে। এছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। এখন শীত মৌসুম চলছে, পর্যটক আসার সময়। কিন্তু ভালোমানের থাকার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই এসে ফিরে যাচ্ছে। এছাড়া আম প্রধান অঞ্চল হওয়ায় দেশ ও দেশের বাইরের লোকজন আসে। তারা আধুনিক সুযোগ সুবিধা পেলে সেখান থেকে এলাকার অর্থনীতি চাঙা হবে। হবে হাজারো বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ গণপূর্ত অধিদফতরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, আরও বেশি জনবান্ধব ও মানসম্মত করতে প্রকল্পটির পরিকল্পনায় সংশোধন আনা হয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে অবকাঠামো ডিজাইনে। এতে ব্যয় ও সময় দুটোই বাড়ছে। একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে তিন বছর সময় লাগবে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের এক জনসভায় পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জে পর্যটনের বিকাশে অনেক সুযোগ রয়েছে আমরা সেটিকে কাজে লাগাতে চাই।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :