মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর ব্যাপক লড়াই চলছে। মিয়ানমারের এই সংঘাতময় পরিস্থিতির প্রভাব বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়ও পড়েছে। তাদের ছোড়া গুলি ও মর্টারশেল সীমান্ত অতিক্রম করে এসে পড়ছে বাংলাদেশে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। এই অবস্থায় মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতি পরিদর্শনে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে গিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তুমব্রু সীমান্তে যান বিজিবি মহাপরিচালক। এরপর তিনি সেখান থেকে তমব্রু বিওপিতে যান। সেখানে তিনি সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি ঘুমধুম সীমান্তে যাবেন। সেখানে তিনি সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলবেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ বিজিবি মহাপরিচালক বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিওপি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা এবং তৎসংলগ্ন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিজিবি মহাপরিচালক।
এসময় মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘মিয়ানমারের ২৬৪ বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাসদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা ধৈর্য ধারণ করে মানবিক দিক থেকে আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এই দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে বাংলাদেশিসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এতে ঘটনাস্থলেই এক রোহিঙ্গা শ্রমিক (৫৫) নিহত হন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান হোসেন আরা। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী বাদশা মিয়ার স্ত্রী। ওই রোহিঙ্গা ব্যক্তি ওই বাড়িতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করতেন। তার পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৬৪ জন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :