AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রমজান মাসে স্কুল বন্ধ রাখার দাবিতে সচেতন অভিভাবক মহলের মানববন্ধন


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
১২:৩৮ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
রমজান মাসে স্কুল বন্ধ রাখার দাবিতে সচেতন অভিভাবক মহলের মানববন্ধন

রমজান মাসে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে একদল সচেতন অভিভাবক। এ সময় তারা সব ধরনের স্কুল বন্ধ রাখার দাবি জানান।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে ‘সচেতন অভিভাবক মহল’ ব্যানারে অভিভাবকরা এই মানববন্ধনে অংশ নেয়। তারা স্কুলের বার্ষিক ছুটির তালিকায় পরিবর্তন এনে ১০ বা ১৫ রোজা পর্যন্ত স্কুল খোলার রাখার হঠকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।  

মানববন্ধনে অভিভাবকরা বলেন, বছরের শুরুতে স্কুল ছুটির তালিকায় পুরো রমজান মাসকে ছুটি আওতায় রাখা হয়।  বিষয়টিতে আমরা খুবই আশ্বস্ত হয়েছিলাম আমাদের সন্তানরা রমজান মাসে ঠিক মত সিয়াম সাধনা করতে পারবে।  কিন্তু কিছুদিন আগে, হঠাৎ করে ছুটি বাতিল করে বলা হলো, রমজানে স্কুল খোলা থাকবে। সিয়াম সাধনার মাসে এ ধরনের সিদ্ধান্ত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মারাত্মক হতাশ করেছে।  

এসময় অভিভাবক মুহম্মদ জাইদুল ইসলাম বলেন, আমি আমার সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই রোজা রাখতে উৎসাহিত করি। কারণ রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষের মাঝে নৈতিক গুনাবলী তৈরী হয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে সন্তানদের চরিত্র গঠন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই সময় সন্তানদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ করে দেয়া খুব দরকার।  এক্ষেত্রে রমজান মাস একটি বড় সুযোগ, কারণ রমজান মাসকে আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন, তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে চরিত্র গঠনের জন্য।  কিন্তু রমজান মাসে বাচ্চাদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ না দিয়ে, যদি ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যস্ত রাখা হয়, তবে তারা নৈতিকতা শিখবে কিভাবে ? রমজান মাস তাকওয়া অর্জনের মাস, ক্লাস-পরীক্ষার মাস না।

মুহম্মদ জাইদুল ইসলাম আরো বলেন, আমরা বাচ্চাদের পড়ালেখা করিয়ে বিদ্যান করছি ঠিক, কিন্তু সজ্জন বা চরিত্রবান করতে পারছি না।  ফলে তারা বিদ্যান হলেও এখন দুর্জন বা চরিত্রহীন থাকছে। আর বিদ্যান দুর্জন হলেও পরিত্যাজ্য। নতুন প্রজন্ম রমজানে ক্লাস খুলে যতই পড়াখেলা করুক, তাদের নৈতিক চরিত্র যদি উন্নত না হয়, তবে তাদের দিয়ে দেশ ও জাতি কোন উপকার পাবে না।

আরেক অভিভাবক মুহম্মদ ফারুক বলেন, রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা ইবলিশ শয়তানকে বন্দি রেখে মানুষকে ভালো কাজ করার সুযোগ দেন, যেন ১টি মাস ভালো কাজের ট্রেনিং নিয়ে, বাকি ১১ মাস ঠিক মত কাটাতে পারে। কিন্তু ভালো কাজের ট্রেনিং এর মাসে যদি কাউকে ভালো কাজ করতে না দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যস্ত রাখা হয়, তবে সে চরিত্র গঠন করবে কিভাবে প্রশ্ন রাখেন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ?

মুহম্মদ ফারুক আরো বলেন, আমাদের মধ্যে অনেককে বলতে শুনি, নতুন প্রজন্ম নাকি অসুস্থ প্রজন্ম হয়ে বেড়ে উঠছে। কথাটা ভুল না। শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা চর্চায় বাধা দেয়া অসুস্থ প্রজন্ম তৈরীর মূল কারণ।  

অন্য অভিভাবক মুহম্মদ পাভেল বলেন, আসন্ন রমজানে মাদ্রাসা বা কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো মাসজুড়ে বন্ধ থাকবে, কিন্তু প্রাইমারী বা মাধ্যমিক স্কুলগুলো খোলা থাকবে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, মাদ্রাসা আর কারিগরী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই কি শুধু মুসলমান? রমজানে তারাই কি শুধু ছুটি পাবে? প্রাইমারী বা মাধ্যমিকের শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা কি মুসলমান নয়? যদি প্রাইমারী বা মাধ্যমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও মুসলমান হয়, তবে তাদের ছুটি কেন বাতিল করা হলো?

মুহম্মদ পাভেল আরো বলেন, করোনার সময় ২ বছর সব বন্ধ রাখায় কোন সমস্যা হয় না, কিন্তু রোজার ১০-১৫ দিন ক্লাস বন্ধ রাখলে পড়ালেখার বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে, এমন যুক্তি কখনই গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি জানান।

অভিভাবক মুহম্মদ হাবীবুর রহমান বলেন, যে বা যারাই রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখতে চায়, তারা কখনই শিক্ষার্থীদের ভালো চায় না। তারা চায় না, নতুন প্রজন্ম নীতি নৈতিকতা নিয়ে বেড়ে উঠুক, বরং তারা চায় আমাদের সন্তানরা নীতি-নৈতিকতা বর্জিত হয়ে ইহকাল-পরকাল দুই কালেই ধ্বংস হয়ে যাক। রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা কখনই ভালো চিন্তা থেকে আসতে পারে না।  রমজান মাসে তাই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা হোক, এটাই একজন অভিভাবক হিসেবে আমার দাবি।

মুহম্মদ হাবীবুর রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। ধর্ম পালনের অধিকার জনগণের মৌলিক অধিকার, যা সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত। রোজায় স্কুল খোলা রেখে বাচ্চাদের ধর্ম পালনের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, যা সংবিধানের ৪১(১)ক ধারা পরিপন্থী। রাষ্ট্র তা কখনই করতে পারে না। আমার সন্তান যেন সঠিক উপায়ে ধর্ম পালন করতে পারে, সে সুযোগ রাষ্ট্রকেই করে দিতে হবে। সুতরাং রোজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে সিয়াম সাধণায় বাধা দেয়ার সিদ্ধান্ত অবশ্যই বাতিল করতে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অভিভাবক মুহম্মদ রেজাউল করিম, মুহম্মদ আমিনুল ইসলাম, মুহম্মদ আবু সায়েমসহ ‘সচেতন অভিভাবক মহল’।


একুশে সংবাদ/রাফি/সা.আ

Link copied!