রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৫ জন মারা গেছেন। আহত সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে হতাহতদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এ সময় আহতদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে ঢামেক হাসপাতালের পরিবেশ।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে বেইলি রোডের ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) হাবিবুর রহমান রাত ১টার পর সাংবাদিকদের জানান, ভবনটির দোতলায় মূলত আগুন লাগে। ভবনটি নিরাপদ ছিল না, সেখানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না। সাততলা বিশিষ্ট ভবনটির উপরে চিলেকোঠা ছিল।
রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পর্যবেক্ষণ কক্ষে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলছে।
কক্ষের বাইরে দগ্ধদের স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে। এ এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। দ্রুতবেগে ছুটছে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স৷ আহতদের নিয়ে ফিরছে হাসপাতালে। সবাই চিন্তিত, সবার চোখে পানি। চারদিকে মানুষের কান্নার শব্দ শোনা যায়।
এদিকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশেই অস্থায়ী তথ্য ও সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। স্বজনরা পূর্ণ ঠিকানাসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিয়ে মরদেহ বুঝে নেয়ার অপেক্ষা করছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুনের ঘটনার পর ৯টা ৫৬ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট। পরবর্তীতে ইউনিট বাড়ার পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে ৩ প্লাটুন সাধারণ আনসার ছাড়াও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১ প্লাটুন আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়।
এছাড়াও উদ্ধার কার্যক্রমে যোগ দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও। একপর্যায়ে ১৩ ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত সোয়া ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে এক ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এ ঘটনায় ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :