রাজধানী ঢাকার ৮০ শতাংশ রেস্তোরাঁ যেন বোমা তৈরির কারখানা। নগরীর ৫ হাজার রেস্তোরাঁর মধ্যে অগ্নিনিরাপত্তা সনদ আছে হাজারখানেকের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি বহুতল ভবনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ রেস্তোরাঁ থাকার কথা থাকলেও মানছে না কেউ।
ধানমন্ডির গাউসিয়া টুইনপিক ভবনটি পুরোটাই ঠাসা রেস্তোরাঁ দিয়ে। ওঠা-নামার একমাত্র পথ লিফট। ভেতরে দুটি সিড়ি থাকলেও একটি বন্ধ গোডাউনে, অন্যটি দখলে সিলিন্ডারে। বারান্দা থাকলেও তা কাচে ঢাকা। এ যেন পুরোই বোমার কারখানা।
টুইনপিক ভবনের নকশা করেন স্থপতি মুস্তাফা খালিদ পলাশ। বেইলি রোড ট্রাজেডির পর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে ভবনটি এড়িয়ে চলার আহ্বান জানান এই স্থপতি। নিজের সৃষ্টির এমন অবস্থা দেখে বিষ্মিত তিনি। দাবি করেন, অফিসের জন্য করা ভবন রেস্তোরাঁ বানিয়ে সব কিছুই পাল্টে ফেলেছেন ভবন মালিক ও ব্যবস্যায়ীরা।
মুস্তাফা খালিদ পলাশ বলেন, এটি ডিজাইন করেছিলাম বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে। আমি কোনোভাবেই সেটি কেমিক্যাল গুদাম হিসেবে ডিজাইন করেনি।
একই অবস্থা ধানমন্ডিসহ রাজধানীর বেশিরভাগ ভবনের। রাজধানীতে প্রকৃত অর্থে কেমন ভবন নির্মাণ হওয়া উচিত? এ প্রশ্নে এই স্থপনি জানান, সর্বোচ্চ ১০ ভাগ রেস্তোরাঁ থাকতে পারবে একটি সুউচ্চ বানিজ্যিক ভবনে। তিনি বলেন, ভবনে রেস্টুরেন্ট দেয়ার ক্ষেত্রে একটি মাত্রা নিদির্ষ্ট করে দেয়া উচিত। ১০০ পার্স্টেন্ট কোনোভাবেই নয়। এই কালাচার আমি কোথাও দেখিনি। সাম্প্রতিক বাংলাদেশে শুরু হয়েছে।
তাহলে এগুলো দেখবে কারা? সরকারের কয়েকটি সংস্থা এর তদারকির দায়িত্বে থাকলেও শুধু খাবারে ভেজালবিরোধি অভিযানেই সারা। ফায়ার সার্ভিসের সাবেক ডিজি ব্রি.জে. আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ বলেন, সরকারি সংস্থার উদাসীনতা ও আইন না মানার প্রবনতা বাড়াচ্ছে সংকট।
রাজধানীর ৫ হাজারের বেশি রেস্তোরাঁ থাকলেও ফায়ার সার্টিফিকেট আছে হাজার খানিকের। অন্যান্য সংস্থার অনুমোদনের ধারধারে না কেউ।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :