রোজার শুরু থেকেই গরু, মুরগি, খাসিসহ সব ধরনের মাংসের দাম বেড়েই যাচ্ছে। প্রথমদিকে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি থাকলেও আজ ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি খাসির মাংস। পাশাপাশি কিছুদিন ধরে ২২০ টাকায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি পাওয়া গেলেও আজ তা বেড়ে ২৩০ টাকা হয়েছে। তবে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। সবজির বাজারে গিয়ে অবশ্য দেখা গেছে গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। গত কয়েক দিন ২১০ থেকে ২২০ টাকায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হলেও, আজ তা বেড়ে ২৩০ টাকায় ঠেকেছে। সেই সঙ্গে অন্য সব ধরনের মুরগির দামও বেড়েছে বাজারে।
বাজারে সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকায়, কক মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। অন্যদিকে রমজানের শুরু থেকে বেড়েই যাচ্ছে গরুর মাংসের দাম। যদিও প্রথমদিকে কোথাও কোথাও গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বেশিরভাগ জায়গায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়। প্রতি কেজি খাসির মাংসের দাম রাখা হচ্ছে ১১০০ টাকা।
রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী এনামুল হক বলেন, সবকিছুর দাম এত বাড়তি যে, কিনে খাওয়াই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে রমজান মাস আসলে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়, অথচ আমাদের দেশে কে কত বেশি দাম নিতে পারবে সেই প্রতিযোগিতা চলে। ব্যবসায়ী, অসাধু সিন্ডিকেটের কাছে আমরা জিম্মি।
আরেক ক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ৭৮০ টাকা কেজি গরুর মাংস, যা অবশ্যই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। কিছুদিন আগে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় নাটক করে ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল, সেই মাংসই এখন সব জায়গাতেই ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বনানী কাঁচাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী এরশাদ আলী বলেন, মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। তাই বাড়তি দাম দিয়ে আমাদেরও মুরগি কিনতে হচ্ছে। পাইকারি বাজারে যখন দাম বৃদ্ধি পায় তখন খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়ে।
অন্যদিকে মগবাজার সংলগ্ন একটি গরুর মাংসের দোকানের বিক্রেতা আজাহার আলী বলেন, গরুর মাংস ৭৮০ টাকা কেজি দরে আজ বিক্রি করছি। তারপরও লাভ হচ্ছে না। কারণ গরুর দাম, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতনসহ সব খরচ দিয়ে লাভ থাকেই না। ইতোমধ্যে ঢাকা শহরের অনেক গরুর মাংসের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়তি দামের কারণে মানুষ গরুর মাংস কেনা অনেক কমিয়ে দিয়েছে। যে দোকানে আগে সারাদিনে একটি গরুর পুরো মাংস বিক্রি হত, এখন সেই দোকানেই অর্ধেকও বিক্রি করতে পারে না।
এদিকে যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারে দেখা যায়, বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে। একইভাবে লাউ, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, করলার মতো সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে।
এছাড়া শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে, বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। আলু বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে এবং পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শালগম ৪০, প্রতি পিস লাউ ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। বড় আকারের আইড় মাছ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি, মলা মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০০ টাকা। পাবদা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও চিতল মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙাশ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, শোল ছোট সাইজের প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, আর মাঝারি সাইজের ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সরপুঁটি মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :