শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, কলকারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার প্রক্রিয়া শিথিল করা হয়েছে। শ্রম আইনটি শ্রমিকবান্ধব করা হবে। এতে আইএলও কিছু সংযোজন করেছে। তাদের অনুরোধেই আইনটি পাস হওয়ার ক্ষেত্রে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে আমাদের আগ্রহের কোনো কমতি নেই।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মে দিবস উপলক্ষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আশা করছি সংসদের আগামী অধিবেশনে অর্থাৎ বাজেট অধিবেশনেই আইনটি পাস হয়ে যাবে।
শ্রমিকদের আটঘণ্টা কর্মঘণ্টা কতদিনে বাস্তবায়ন হবে এমন প্রশ্নের প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাত থেকে বেশির ভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আসে। তারা যখন বিদেশি অর্ডার বাস্তবায়ন কিংবা রফতানি তাড়াতাড়ি করাতে শ্রমিকদের ওভারটাইম করান। এ জন্য তাদের পাওনা দেয়া হয়। শ্রমিকরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এটা পারস্পরিক বিষয়, সমঝোতার ভিত্তিতে করা হয়। আবার অনানুষ্ঠানিক খাতে এগুলো হয়। যেমন দোকানে আটঘণ্টার বেশি শ্রম দিতে হচ্ছে। এসব বিষয় নিরসনে আমরা কাজ করছি।’
ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে বিধান অনেক শিথিল করা হয়েছে। অনলাইন ও অফলাইনে ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন আমরা দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে তাদের বাধাগুলো শিথিল করে তারা যাতে সহজে ট্রেড ইউনিয়ন পেতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।’
শ্রম আইন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইন না মানলে আমরা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারি। সেটা বাস্তবায়ন করতে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে পরিদর্শকরা আছেন। তারা পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। শ্রম আইন না মানলে লাইসেনস বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয় না, এমনটা বলা যাবে না। আমি আশ্বাস করতে চাই, গেল দুই মাসে আমার মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করা হয়েছে।’
বিভিন্ন কলকারখানায় শিশুশ্রম নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো অনানুষ্ঠানিক খাত। একটা বাসায় কাজের ছেলে কিংবা কাজের মেয়ে রাখা বা গ্যারেজে কোনো গরিব ঘরের সন্তানকে কাজ শেখানোর জন্য কাজে লাগানো হয়। এসব খাতে আমরা হস্তক্ষেপ করলেও বন্ধ করা সম্ভব হয় না। তবে প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই।’
এ সময়ে শ্রমসচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় থেকে শতভাগ চেষ্টা করা হবে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে শিশু শ্রম নিরসন করা হবে। যদিও সেটা খুবই উচ্চাভিলাষী। মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে দ্রুতই শিশুশ্রম নিরসন করা যায়। তৈরি পোশাক খাতসহ বিভিন্ন কলকারখানার মালিকরা আইএলওর কনভেনশন মেনে চলার অঙ্গীকার করেছেন।’
একুশে সংবাদ/ড.ব.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :