অবশেষে প্রকৃতি সদর হলো। কমলো তাপমাত্রা। টানা ৩৭ দিন পর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এসেছে প্রকৃতি। গত ৩১ মার্চ দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছিল। প্রথমে মৃদু তাপপ্রবাহ দেখা দিলেও এপ্রিলের শেষার্ধে তা তীব্র থেকে অতি তীব্র হতে থাকে। পরে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতা বাড়ায় কমতে থাকে তাপমাত্রা। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার (৭ মে) এসে পুরো দেশে থেকেই বিদায় নিলো তাপপ্রবাহ।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি হলে তাপপ্রবাহ ধরা হয়। সে হিসাবে স্বাভাবিক স্তরে নেমে এসেছে তাপমাত্রা।
৩১ মার্চ থেকে টানা ৩৭ দিন ধরে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এ তাপপ্রবাহ ৭৬ বছরের মধ্যে রেকর্ড।
৩০ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে, যা গত পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১৯৯৫ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল আগের নয় বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ঈশ্বরদীতে, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ২০১৪ সালের মে মাসে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় ১৯৭২ সালের ১৮ মে।
চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়, যা তার আগের ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ঢাকায় ১৯৬৫ সালে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বর্তমানে পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
তিনদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস বলছে বুধবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমবে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
বৃহস্পতিবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শুক্রবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
বর্ধিত পাঁচদিনের আবহাওয়ায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :