এক সিদ্ধান্তেই পাল্টে গেছে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকার যানজটের চিরচেনা রূপ। বাসে যাত্রী তুলার জন্য চালক-সহকারীদেরও হাঁকডাক নেই। বাসে উঠার জন্য যাত্রীদের মধ্যে নেই হুড়োহুড়ি। পথচারীরা জানালেন, বর্তমানে মহাখালীর চিত্র আগের চেয়ে তুলনামূলক ভালো। যানজট কম হওয়ার যেকোনো উদ্যোগকেই সাধুবাদ জানানোর কথা বললেন তারা। বাসের গেটলক সার্ভিসে অতিরিক্ত যাত্রী না থাকায়, স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করা যায় বলেও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
গত রোববার (১২ মে) মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাসে চালু হয়েছে গেটলক সার্ভিস। তাতে এ দৃশ্যের দেখা মেলে।
মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো বনানী পযর্ন্ত কোথাও না দাঁড়ানোর কথা। রাজধানীর মধ্যে কাকলী, কুর্মিটোলা, খিলক্ষেত ও আব্দুল্লাহপুরে বাসগুলোর চেকিং হবে। কাউন্টারের বাইরে যাতে যাত্রী তোলা না হয়, এই উদ্দেশে গেটলক সার্ভিস চালু করা হয়।
কিন্তু কে শোনে কার কথা? মহাখালী পার হয়ে আমতলী বা চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় আসতেই আগের রূপে ফিরে যান চালক-সহকারীরা। যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে তুলছেন যাত্রী। এ নিয়ে এক বাসচালককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, টিকিট কাটা একজন যাত্রী থাকায় বাস থামিয়েছেন তিনি।
গেটলক সার্ভিসের এক চেকার জানান, গতকাল মঙ্গলবার ২৩টি বাসের অনিয়ম ধরা পড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আরেক চেকার জানান, শৃঙ্খলা ফিরতে কয়েকদিন সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিন মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ৪৭টি রুটের প্রায় এক হাজার দুইশত বাস ছেড়ে যায়। মালিক সমিতির দাবি, কিছু চালক ও যাত্রীদের কারণে গেটলক সার্ভিস পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।
মহাখালী বাস টার্মিনালের সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, যাত্রীরা রাস্তায় বাসকে সিগন্যাল দেয়। কারণ টার্মিনালে আসলে তাদের পূর্ণ ভাড়া দিতে হবে। আর রাস্তায় উঠলে কম ভাড়ায় যাওয়া যাবে।
এদিকে, যত্রতত্র যাত্রী উঠানো নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। আইন না মানায় অর্ধশতাধিক গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত যাত্রীদের মধ্যে সচেনতা এবং চালকদের আইন মানার প্রবণতা তৈরি না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই সার্ভিসের সুফল পাওয়া যাবে না। শুধু আইন ও জরিমানা করে যানজট নিরসন করা কঠিন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, পুলিশ, বাস মালিক ও শ্রমিকরা মিলে গেটলক সার্ভিস চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই এটি মানতে তাদেরকে বাধ্য করা হবে। এ সময় সার্ভিসটি শতভাগ কার্যকর হবে বলেও জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/য.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :