ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারের মৃতদেহ উদ্ধার নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরী হয়েছে। কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের যে ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ, সেখানে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। এর মধ্যেই এ ঘটনায় নতুন আরেক রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারা দুটি মোবাইলের নেটওয়ার্ক ট্র্যাক করছিল। সেখান থেকেই দেখা গেছে, সঞ্জিভা গার্ডেন্সই এমপি আনারের শেষ লোকেশন ছিল। এরপরই পুলিশের তদন্তকারী দল সেখানে যায় এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশের তদন্তকারী দলের সদস্যরা নিশ্চিত হন, এমপি আনার সেখানে গিয়েছিলেন এবং তিনি একাই সেখানে যান।
কিন্তু এরপরই এমপি আনারের ওই ফ্ল্যাটে ঢোকেন পরপর তিনজন। তারমধ্যে একজন নারীও ছিলেন। এই তিনজনকে আবার কিছুক্ষণ পরই কয়েক দফায় বেরিয়েও যেতে দেখা যায়। এ ছাড়া ওই ফ্ল্যাটে ঢোকার জন্য তড়িঘড়ি করে ৩-৪টি গাড়িও আসা-যাওয়া করে। সেই নারীকে নিয়েও রহস্য দেখা দিয়েছে। আসলে কে তিনি?
জানা গেছে, সেই গাড়ির সূত্র ধরেই এখন তদন্ত চলছে। আরও কিছু অ্যাপ ক্যাবের নেটওয়ার্ক ও তার চালককে ইতোমধ্যেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গোয়েন্দারা।
এদিকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় তিনজনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘খুনের সাথে বাংলাদেশিরাই জড়িত।’ বুধবার (২২ মে) ধানমন্ডির বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম ১২ মে চিকিৎসার জন্য দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। ১৬ মে থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।
আনারের জন্ম ৩ জানুয়ারি ১৯৬৮ সালে। পেশায় ব্যবসায়ী। আনার আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন।
ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে তিনবার (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) নির্বাচিত আনার একজন ক্রীড়া সংগঠক এবং একসময়ের জনপ্রিয় ফুটবল খেলোয়াড়।
ছাত্রজীবন থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে শুরু করেন। স্থানীয় পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে ভোটের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। এরপর বিশাল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হন আনার। সবশেষ জাতীয় নির্বাচনগুলোতেও তিনি জয়ের ব্যবধান দিয়ে জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রাখেন।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :