ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে রেমাল পরিণত হয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। এরই মধ্যে উপকূলীয় বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো হাওয়া ও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলের ১৩টিসহ ১৮ জেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডব চালাতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার দিকে প্রবল শক্তিমত্তায় আঘাত হানবে রেমাল। এটি অতিক্রমের সময় ৮ থেকে ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এ অবস্থায় উপকূলের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন।
উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে সকাল থেকেই হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশে মেঘ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রূপ নেয়ায় ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর বাগেরহাটে প্রস্তুত করা ৩৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিতে কাজ করছে প্রায় ৫ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক। এদিকে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর মোংলা বন্দরে সব ধরনের কাজ বন্ধ রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলেও রেমালের প্রভাবে দমকা হাওয়া বইয়ে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মে মাস উপকূলবাসীর জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত একযুগে এ মে মাসে অন্তত ৮টি ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করেছে এ উপকূলবাসী। আবারও মে মাসের শেষ দিকে চোখ রাঙাচ্ছে রেমাল।কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে উত্তাল অবস্থায় রয়েছে সাগর। বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে উপকূলে। এতে উপকূলে থাকা ছোট ছোট দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এরইমধ্যে রেমালের প্রভাবে দমকা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছে উপকূলবাসী। সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলা প্রায় ৬৩ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে ৮টি স্থানে প্রায় ২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে। ফলে বাসিন্দাদের শঙ্কা এ বাঁধ ভেঙে যদি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয় আবারও জানমালের ব্যাপক ক্ষতিতে পড়বেন বাসিন্দারা।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরেও ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এবং বন্দরে অবস্থানরত ১৬টি জাহাজকে গভীর সমুদ্রে চলে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে নির্দেশ মেনে এখন পর্যন্ত ১৩টি জাহাজ গভীর সমুদ্রে চলে গেছে। বাকিরা পর্যায়ক্রমে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া বর্হিনোঙ্গরে অবস্থিত ৪৯টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ আছে।
বরগুনায় রাত থেকে থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। মাঝে মাঝেই বইছে দমকা হাওয়া। তবে নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে। জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় ৬৭৩টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৩টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :