শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, হংকং কনভেনশন প্রতিপালন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পের টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত আন্তরিক এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও)-এর সর্বাত্মক সহয়োগিতা প্রয়োজন। আইএমও মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে এতে গতি সঞ্চার হবে বলে আশা করা যায়।
আইএমও এর মহাসচিব Arsenio Antonio Dominguez Velasco বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর সঙ্গে রাজধানীর মতিঝিলে তাঁর দপ্তরে সাক্ষাৎকালে উপস্থিত সাংবাদিকদেরদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জীবনের শেষ সীমায় পৌঁছানো জাহাজের নিরাপদ এবং পরিবেশসম্মত উপায়ে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ গত ২৫ জুন ২০২৩ তারিখে হংকং কনভেনশন অনুসমর্থন করে। সে হিসেবে আগামী ২০২৫ সালের ২৬ জুনের মধ্যে বাংলাদেশকে কনভেনশন প্রতিপালন করতে হবে এবং সকল ইয়ার্ডসমূহে Treatment Storage and Disposal Facility (TSDF) নিশ্চিত করতে হবে। নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশের এ সম্ভাবনাময় শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ গ্রহণসহ করণীয়সমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। মন্ত্রী এ সময় হংকং কনভেনশন প্রতিপালনে শিপ ইয়ার্ড মালিকদের জন্য উন্নয়ন সহযোগী বা আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার কাছ থেকে সফট লোন পেতে আইএমও`র সহযোগিতা কামনা করেন। তাছাড়া জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পের টেকসই উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনেও আন্তর্জাতিক সংস্থাটির সহায়তা চান।
সাক্ষাৎকালে আইএমও মহাসচিব বলেন, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পের টেকসই উন্নয়নে আইএমও প্রবর্তিত হংকং কনভেনশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এ শিল্পের টেকসই, নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব উন্নয়নে সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ স্বচক্ষে দেখা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য আমার এ সফর। Arsenio Dominguez বলেন, এ শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করছে দেখে আমি খুশি। আমরা এ শিল্পের সার্বিক উন্নয়নে আইএমও এর পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মহাসচিব এ সময় বাংলাদেশ সরকার ও আইএমও এর সহযোগিতায় বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও নির্মাণ শিল্প আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাৎকালে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্বে) এস এম আলম, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরক্ত সচিব ড. শাহ্ মোঃ হেলাল উদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ১৯৮০ সাল থেকে জাহাজ রিসাইক্লিং করে আসছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় শতাধিক শিপ সাইক্লিং ইয়ার্ড রয়েছে। উল্লিখিত ইয়ার্ডগুলির মধ্যে ৫০টি চালু রয়েছে। দেশের সামগ্রিক লোহার চাহিদার প্রায় ৬০% আসে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্প থেকে। প্রায় ২ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ খাতের ওপর নির্ভরশীল।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :