দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমান বলেছেন, তিস্তা প্রকল্পে আমাদের ভারত এবং চীন উভয় দেশই সহযোগিতা করতে চায়। আমাদের ভালো খবর হলো ভারত এবং চীন এ প্রকল্পে একত্রে কাজ করতে রাজি হয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তিস্তা প্রকল্পের ওপর সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে চীন। এ প্রকল্পে ভারত এবং চীন দুই দেশই ফান্ড দিতে চাচ্ছে। আমাদের ভালো খবর হলো ভারত এবং চীন এ প্রকল্পে একত্রে কাজ করতে রাজি হয়েছে।’
‘এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে বলেছেন, কারও কাছে থেকে অর্থ নিলে দেশ উপকৃত হবে। যার কাছ থেকে অর্থ নিলে বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ থাকবে তার থেকেই নেব। এটাই হলো সবচেয়ে বড় দেশপ্রেমের কথা।’
মুহিববুর বলেন, ‘বন্যার পানি আসলেই দ্রুত সেটা ড্রেজিং করে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে যেতে হবে। এই তিস্তা ব্যারেজ কিন্তু এই প্রকল্পের একটি অংশ। উজান থেকে পানি আসলে তো আমাদের করার কিছুই নেই। বন্যার যাতে দ্রুত নিষ্কাশন করা যায়, সে বিষয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছে।’
এ সময়ে বন্যাকবলিতরা পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা উড়িয়ে দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্যাদুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে।’
দেশের অনেক অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যেসকল এলাকায় বন্যা হয়েছে, সেসব জেলার ডিসি নিশ্চিত করেছেন যে তাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে। যাকে যেখানে সহযোগিতা করা দরকার সেটা তারা করছেন। এই অভিযোগের সত্যতা আমরা পাইনি। আমি পরিস্কার বলতে চাই আমাদের ত্রাণের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ ত্রাণ না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তারপরও যদি এমন তথ্য আমাদের কাছে আসে, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।’
‘এছাড়া ৯৯৯-এ কল দিলেও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে। বাংলাদেশের এমন কোনো গ্রাম-ইউনিয়ন নেই, যেখানে আমাদের স্বেচ্ছাসেবী নেই। এখন পর্যন্ত আমাদের কোথাও কোনো ঘাটতি নেই,’ দাবি করেন মুহিববুর।
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জেলায় বন্যাকালীন ত্রাণ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়ে রাখা হয়েছে। এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। ভবিষতেও দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সমগ্র পৃথিবীতে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ একটা মডেল।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্যা পরবর্তী ক্ষতি যাতে মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারেন, সেসব বিষয়েও আমরা কাজ করছি। বন্যায় ত্রাণ সরবরাহে যাতে কোনো সমন্বয়হীনতা না থাকে, সেদিকে খেয়াল রেখে সব জেলার ডিসির সাথে জুম মিটিং করেছি। তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ মাথাপিছু কেমন বরাদ্দ পাচ্ছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান বন্যাটা অনেক লম্বা সময়ের জন্য হয়। এখনকার বন্যার মাথাপিছু বরাদ্দ করা হয়নি। তবে যখন যার যেটা দরকার, সেটা দেয়া হচ্ছে। এখানে গ্যাপ থাকার সুযোগ নেই।’
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :