ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অংশীজন কর্তৃপক্ষ-সংস্থা যথার্থ দায়িত্ব পালন করছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
১০ জুলাই রাজধানীর টিকাটুলির শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ে `বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম` পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র এ মন্তব্য করেন।
তাপস বলেন, ‘দৈনন্দিন নিয়মিতভাবে সকালে-বিকালে আমাদের মশককর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে আমরা গত মে মাসে সকল সংশ্লিষ্ট সংস্থা, কর্তৃপক্ষের সাথে মতবিনিময় করেছি, দিক-নির্দেশনা দিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকেও সভা করে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজকে এখানে পরিদর্শনে এসে দেখলাম, আমরা সংশ্লিষ্ট অংশীজন, কর্তৃপক্ষ, সংস্থার সাথে মতবিনিময় করে যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেই, সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে না, যে নির্দেশনা দেওয়া হয় তা সঠিকভাবে পরিপালন হচ্ছে না।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে নির্মাণাধীন যে শিক্ষা ভবন রয়েছে, তার বেহাল দশা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, কর্তৃপক্ষের কোন কর্মকর্তা এখানে নেই। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট অংশীজন কর্তৃপক্ষ-সংস্থা যথার্থ দায়িত্ব পালন করছে। যার ফলে আমাদের জন্য কাজ করা দূরুহ হয়ে পড়ছে।"
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট অংশীজন সংস্থা-কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীলতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র বলেন, "আমি আশা করি, গণমাধ্যমের মাধ্যমে তারা বিষয়টি অনুধাবন করবে, তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবে, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। পানি জমতে দিবে না।
নিয়মিত জমা পানি ফেলে দিবে। এজন্য যদি ব্লিচিং পাউডার, কেরোসিন, লার্ভিসাইডিং, এডাল্টিসাইডিং- যা যা প্রয়োজন তা আমরা দিতে প্রস্তুত। আমাদেরকে জানানোর সাথে সাথে আমাদের কর্মীবাহিনীর মাধ্যমে সে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু তাদেরকে সে দায়িত্বটা অবশ্যই নিতে হবে।"
এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে করপোরেশনের সামষ্টিক কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী পাচ্ছে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র বলেন, "বিশেষজ্ঞগণের আশঙ্কা আমলে নিয়ে মশক নিধন কার্যক্রমকে আমরা আরো জোরদার করেছি। আমরা ইতোমধ্যে সকল হাসপাতাল, পুলিশ ফাঁড়ি-থানায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এখন আমরা সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয়গুলোর স্থাপনা ও এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছি। ফলে, গত বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত রোগীর যে সংখ্যা ছিল, এবার তার চেয়ে রোগীর সংখ্যা অনেক কম রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এসব কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী পাচ্ছে।"
উল্লেখ্য, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সমন্বয়ে গত ৮ জুলাই হতে করপোরেশনের আওতাধীন সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করে। আজ ২য় দিনের মতো কর্পোরেশনের ১০ অঞ্চলে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আগামী ১৫ জুলাই ও ২২ জুলাই তারিখেও এই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা ফজলে শামসুল কবির, কাউন্সিলরদের মধ্যে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের রোকন উদ্দিন আহমেদ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সারোয়ার হাসান আলো, সংরক্ষিত আসনের লাভলী চৌধুরীসহ করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :