AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ভারতে শকুন মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠল


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৫:২৮ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২৪
ভারতে শকুন মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠল

একসময় ভারতের সবখানে বিপুলসংখ্যক শকুন দেখা যেত। আবর্জনার স্তূপের ওপর ও মৃত প্রাণীর সন্ধানে ওড়াওড়ি করত বিশেষ শ্রেণির এসব পাখি। বিমানবন্দরে ওঠানামা করার সময় কখনোবা উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে ঢুকে পাইলটদের জন্য বিপদের কারণ হয়েও উঠতে দেখা গেছে শকুনদের।

কিন্তু দুই দশকের বেশি আগে থেকে ভারতে শকুন মারা যেতে থাকে। এর কারণ ছিল অসুস্থ গরুর চিকিৎসায় একধরনের ওষুধের ব্যবহার। ১৯৯০–এর দশকের মাঝামাঝি ভারতে শকুনের সংখ্যা ছিল পাঁচ কোটি। তখন থেকেই আবার গবাদিপশুর চিকিৎসায় সস্তা নন–স্টেরয়েডাল ব্যথানাশক ‘ডাইক্লোফেনাক’–এর ব্যবহার শুরু হয়। এতে বিপুলসংখ্যক শকুন কমতে কমতে এসে দাঁড়ায় একরকম শূন্যের কোঠায়। ওই ওষুধে চিকিৎসা করা পশুর মৃতদেহ খেয়ে অসুস্থ হওয়ার পর শকুনগুলো মারা যেতে থাকে। ডাইক্লোফেনাকের ব্যবহার শুধু শকুন কমে যাওয়ার মধ্যে সীমিত থাকেনি। এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মৃত পশুর দেহাবশেষ খেয়ে বেঁচে থাকা এই পাখি কমে যাওয়ায় প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়া ও নানা সংক্রমণ বেড়ে যায়; যা পাঁচ বছরে প্রায় অর্ধমিলিয়ন (পাঁচ লাখ) মানুষের মৃত্যুতে ভূমিকা রাখে। এ–সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন আমেরিকান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণার সহরচয়িতা ও ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর হ্যারিস স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহকারী অধ্যাপক ইয়েল ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘শকুনকে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে ধরা হয়। কেননা, পরিবেশ থেকে নানা ক্ষতিকর উপাদান ও মৃত পশুর ব্যাকটেরিয়াবাহী দেহাবশেষ অপসারণে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শকুন না থাকলে ছড়িয়ে পড়তে পারে রোগবালাই।’ইয়েল ফ্রাঙ্ক আরও বলেন, ‘মানবস্বাস্থ্য রক্ষায় শকুনের ভূমিকা বন্য প্রাণী রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। শুধু আকর্ষণীয় ও আদুরে প্রাণীই যে রক্ষা করা প্রয়োজন, তা নয়; বরং সব বন্য প্রাণীই রক্ষা করতে হবে। আমাদের প্রতিবেশ ব্যবস্থায় সব প্রাণীরই ভূমিকা রয়েছে, যা আমাদের জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।’

ইয়েল ফ্রাঙ্ক ও গবেষণার অপর সহরচয়িতা অনন্ত সুদর্শন ভারতের একসময়ের শকুনসমৃদ্ধ বিভিন্ন জেলায় শকুন কমে যাওয়ার আগে ও পরে মানুষের মৃত্যুর হারের তুলনামূলক চিত্র দেখেছেন। জলাতঙ্কের টিকা বিক্রি, খ্যাপাটে কুকুরের সংখ্যা ও সরবরাহ করা পানিতে প্যাথোজেনের উপস্থিতির মাত্রাও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেছেন তাঁরা। এই গবেষকেরা দেখেন, গবাদিপশুর চিকিৎসায় প্রদাহবিরোধী বা ব্যথানাশক ওষুধের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার পর শকুনের সংখ্যা কমে গেছে এবং একসময়ের শকুনসমৃদ্ধ জেলাগুলোয় মানুষের মৃত্যুর হার ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে।

ডাইক্লোফেনাকের ব্যবহার শুধু শকুন কমে যাওয়ার মধ্যে সীমিত থাকেনি। এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মৃত পশুর দেহাবশেষ খেয়ে বেঁচে থাকা এই পাখি কমে যাওয়ায় প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়া ও নানা সংক্রমণ বেড়ে যায়; যা পাঁচ বছরে প্রায় অর্ধমিলিয়ন মানুষের মৃত্যুতে ভূমিকা রাখে। স্টেট অব ইন্ডিয়া’স বার্ডসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে বর্তমানে যেসব শকুন রয়েছে, তারা মূলত গবাদিপশুর চেয়ে সংরক্ষিত এলাকার বন্য প্রাণীর মৃতদেহ খেয়ে টিকে আছে। অব্যাহতভাব শকুন কমতে থাকার বিষয়টি এই পাখির বিরুদ্ধে হুমকি চলমান থাকাকে ইঙ্গিত করছে। একই সঙ্গে তা মানবস্বাস্থ্যের ওপর শকুন কমে যাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও বাড়িয়ে তুলছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ এখনো শকুনের জন্য এক বড় হুমকি। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত গবাদিপশুর মৃতদেহ কমে যাওয়া, খ্যাপাটে কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ওই সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে। প্রশ্ন উঠেছে, শকুন কি আবার স্বাভাবিক সংখ্যায় ফিরে আসবে? এর জবাব দেওয়াটা কঠিন। তবে এ নিয়ে কিছু আশাবাদী লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। দক্ষিণ ভারতে সম্প্রতি এক জরিপে তিন শতাধিক শকুনের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। অবশ্য আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।

 একুশে সংবাদ/প্র.আ/হা.কা

 

Link copied!