গণভবন থেকে লুট হওয়া প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা দামের এসএসএফের অত্যাধুনিক অস্ত্র, গ্রেনেড ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম দ্রুত উদ্ধারের তাগিদ দিয়েছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, দ্রুত এসব উদ্ধার করা না গেলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা আছে। এ বিষয়ে এসএসএফ বলছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর গণভবন ছাড়তে তাদের হাতে সময় ছিল অনেক কম।
ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট গণভবন ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তেজিত ছাত্র-জনতা গণভবন ঘিরে ফেললে নিরাপত্তা শঙ্কায় পড়েন সেখানের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী এসএসএফ।
গণভবনের নিরাপত্তায় নানা অত্যাধুনিক অস্ত্র, গোলাবারুদ, রেডিও ও অপারেশনাল সরঞ্জাম মজুত করেছিল এসএসএফ। তবে ছাত্র-জনতা দ্রুত অগ্রসর হওয়ায় সঙ্গের ছোট অস্ত্র নিয়েই গণভবন ছেড়ে সংসদ ভবনে চলে যান বাহিনীর সদস্যরা। এসএসএফ জানিয়েছে, বহিরাগতরা প্রবেশের পর গণভবন থেকে খোয়া যায় এসব অস্ত্র ও সরঞ্জাম।
তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, গণভবনে এসএসএফ অপারেশন রুমের দুটি স্থায়ী ভল্টে দুটি এসএমজি টি-৫৬ রাইফেল ও ৯ হাজার ৪৯৮ রাউন্ড গুলি ছিল। এ ছাড়া এসএসএফ সদস্যরা সংসদ ভবনে তাদের ভল্টে ছয়টি পিস্তল ও ২০০ রাউন্ড গুলি রাখেন। পরে গণভবন ও সংসদ ভবনের সেই ভল্টগুলো পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া গণভবনের ছাদে স্থাপিত দুটি অ্যান্টি ড্রোন গান ও একটি সিস্টেম খোয়া যায়। এসব সরঞ্জামের আর্থিক মূল্য প্রায় ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
তদন্ত প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, গণভবন থেকে অস্ত্র ও ম্যাগাজিন লুটে ক্ষতি হয়েছে ১১ লাখ ৬২ হাজার টাকা, গোলাবারুদ ও গ্রেনেডে ১১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, যোগাযোগ ও অপারেশনাল সরঞ্জামে ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, আইটি ও গোয়েন্দা সরঞ্জামে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, যানবাহন খাতে ১৪ লাখ টাকা এবং অন্যান্য সরঞ্জামে ৭৪ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, বিশেষায়িত বাহিনীর এসব খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও সরঞ্জাম দ্রুত উদ্ধার করতে হবে।
এসব অত্যাধুনিক অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি হারানোয় কারো দায় আছে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখার আহবান এই বিশ্লেষকের।
ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে এসএসএফের অপারেশনাল রুম আরও সুরক্ষিত করতে একটি আলাদা অফিসার্স প্যানেল গঠনের সুপারিশ করেছে তদন্ত পর্ষদ।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :