পাঠ্যপুস্তক সংশোধনে গঠিত সমন্বয় কমিটি বাতিলের বিষয়টিকে সরকারের নতজানু নীতির বহিঃপ্রকাশ মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) অভিমত প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্য ড. রুশাদ ফরিদী।
তিনি বলেন, ‘প্রথমত এই কমিটি বানচাল হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে মনে হয় এ সরকারের একটা প্রচণ্ড নতজানু নীতির বহিঃপ্রকাশ। কোনো একটা বিষয়ে দ্রুত কম্প্রোমাইজ করে যাওয়ার প্রবণতা। যেই ধর্মীয় ব্যক্তি এটার ডাক দিচ্ছেন, তার সঙ্গে সাবেক স্বৈরাচারের অন্যতম সহযোগী এস আলমের সঙ্গে যোগাযোগ আছে।
সমন্বয় কমিটিতে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ না থাকায় এটিকে ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘যখন আমরা কারও পেছনে নেতিবাচক কথা বলি, তখন এত মাত্রায় বলি যে তা অতিমাত্রায় রূপ ধারণ করে। যেটা আমাদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচারের একটা অংশ। শিক্ষা বিষয়ে যাদের পড়াশোনা, শিক্ষা বিষয়ে যাদের গবেষণা, শিক্ষা বিষয়ে যাদের চর্চা, যারা বিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত অন্তত এ বিষয়ে কাজ করেছেন, তাদেরকে দিয়ে এ কাজগুলো করতে হবে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করেন, সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ কমিটিতে কোথায়?
তবে কমিটিতে থাকা সদস্যদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষোদ্গার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে কমিটি বাতিল হলেও সংশোধন ও পরিমার্জন প্রক্রিয়ায় ভাটা পড়বে না বলে জানিয়েছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘যখন এ ধরনের কমিটি না থাকে, এনসিটিবি তখন নিজের আইন অনুযায়ী তার যে দায়িত্ব, সে অনুযায়ী এ পরিমার্জন সম্পন্ন করে থাকে। আমরা সে কাজই করে যাব।
উল্লেখ, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চলমান কারিকুলাম অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। পুরানো কারিকুলামে ফিরে যেতে শুরু হয় পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন প্রক্রিয়া। গঠন করা হয় ১০ সদস্যের সমন্বয় কমিটি। এরপর থেকেই দাবি ওঠে কমিটিতে শিক্ষা ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ রাখার। এছাড়া কমিটির দুই সদস্যকে নানা ট্যাগ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলে আলোচনা-সমালোচনা। এমন পরিস্থিতিতে গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সমন্বয় কমিটি বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
একুশে সংবাদ/সম/ট/এন
আপনার মতামত লিখুন :