চাঁদপুরের হাইমচরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল সমন্বয়ক আহসান হাবিবকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১০টার দিকে হাইমচর সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার জলিল মাস্টারের ভাগ্নে মিরাজ হোসেনের নেতৃত্বে এ হামলার অভিযোগ করেছেন হাবীবের পরিবারের লোকজন। গুরুতর আহত আহসান হাবীবের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ দিকে, হামলার ঘটনায় জড়িত নুরমিয়া আখনের ছেলে সিয়াম হোসেনকে আটক করেছে হাইমচর থানা পুলিশ।
আহত আহসান হাবীবের মামা দুলাল পাটোয়ারী জানান, তার ভাগিনা আহসান হাবীব হাইমচর কলেজছাত্র দলের সভাপতি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আন্দোলন করেন। গত ৪ আগস্ট আন্দোলনে হাবিব গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে নিজে বাদী হয়ে হাইমচর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা করার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আব্দুল জলিল মাস্টার তাকে নিরপরাধ মানুষকে মামলায় জড়ানোর কথা বলেন। তিনি রাজী না হওয়ায় পরবর্তীতে মামলা তুলে নেয়ার জন্যও হুমকি দেন।
তিনি আরও জানান, তার কথা না শোনার কারণে তিনি তার ভাগ্নে মিরাজকে দিয়ে কয়েকবার তার ওপর হামলা করান। শেষ পর্যন্ত হাবিবকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করে কুপিয়ে জখম করেন। আহসান হাবীব বর্তমানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
হাইমচর সরকারি কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. কামরুল ইসলাম জানান, হাইমচর কলেজের সামনে যে ঘটনাটি ঘটে গেল তা অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। আমাদের কলেজে কখনো এমন জঘন্যতম হামলার ঘটনা ঘটেনি। আহত আহসান হাবীব ও হামলাকারী মিরাজ দুজনই এ কলেজের ছাত্র। আহসান হাবীবের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা আলমাস উদ্দিন আখনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম মিরাজকে প্রাথমিকভাবে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় কলেজ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি।
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি তদন্তের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ এ রকম তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তীতে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরও জানান, মিরাজ নামে এই ছেলেটি একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি ইতিপূর্বে কলেজশিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। ওই সময় তার কাছ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকারনামাও রাখেন।
এদিকে, হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিউদ্দিন সুমন জানান, শিক্ষার্থী আহসান হাবীবের ওপর হামলার ঘটনায় সিয়াম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আটক করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/স স/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :