ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গুলি ছুড়েছে পুলিশ। ওই সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রাণঘাতী অস্ত্র থেকে গুলি বর্ষণকারী পুলিশ সদস্যদের তালিকা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পুলিশের অন্তত ৭৩৭ জন ও অন্যান্য বাহিনীর ৪৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তালিকাটি যাচাই-বাছাই করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউন ছিল কর্মসূচি ১৮ জুলাই। এদিন ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় চরম দমন-পীড়ন চালায় পুলিশ। এ সময় সরাসরি গুলি চালিয়ে হত্যাও করা হয়।
১৮ থেকে ২১ জুলাই এই চার দিনে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা ১১৫টি মামলার নথি বিশ্লেষণ করেছে আইনজীবীদের সংগঠন লিড। তাদের তথ্য অনুযায়ী, যেসব পুলিশ সদস্য গুলি চালিয়েছেন, তাদের মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার ৩৫৩ জন, শাহবাগ থানার ৫৩ জন, মোহাম্মদপুর থানার ১৬২, রামপুরা থানার ৩১, ধানমন্ডি মডেল থানার ৩, উত্তরা পূর্ব থানার ৬৫, আর চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার ৩১, চান্দগাঁও থানার ৫৪, কর্ণফুলী থানার ২, কোতোয়ালী থানার ৩৩ জন পুলিশ সদস্য। অন্যান্য বাহিনীর রয়েছে আরও ৪৭ জন সদস্য।
এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (লিড) লইয়ার ফর এনার্জির প্রধান নির্বাহী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, শুধু ভিন্ন মত পোষণের কারণে ছাত্র-জনতার ওপর রাষ্ট্রপক্ষ বিনা দ্বিধায় দমন-নিপীড়ন ও গুলি চালায়। এটি সম্পূর্ণ মানবতাবিরোধী অপরাধ।
এ বিষয়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘পুলিশ কেন মানুষদের ওপর গুলি চালাবে। ছাত্র-জনতার মবের মধ্যে তো পুলিশের বাবা, ভাই বা সন্তানও থাকতে পারে।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল মো. আব্দুল হক (অব.) বলেন, অনেক পুলিশ সদস্যই আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার সঙ্গে নিজেরাও টিকে থাকতেই দমন-পীড়ন চালিয়েছেন।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, মাঠ পর্যায়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণকারী ও নির্দেশদাতাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :