কুমিল্লায় চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানুর (৭৮) গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধার মানহানির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে প্রেস উইং জানিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি। তবে আমরা সবাইকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত শুরু করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে, মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি দিবস উপলক্ষে পদক দেওয়া অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর গলায় যারা জুতার মালা দিয়েছে তারা দুষ্কৃতকারী। তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
এর আগে রোববার দুপুরে বাড়ির পাশের গ্রামে ৭৮ বছর বয়সী কানুকে একা পেয়ে স্থানীয় অন্তত ২০ ব্যক্তি তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। তাদেরই একজন ঘটনার ভিডিও করে, যেটি ফেসবুকে ছড়িয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা কানুর হাত ধরে সামনে নিয়ে যাচ্ছেন দুই ব্যক্তি। এ সময় তার গলায় রশি দিয়ে বাধা কয়েকটি জুতা দেখা যায়। তার আশপাশে ঘিরে ছিল আরও কয়েকজন। তাদের একজন কানকে বলেন কুমিল্লা থেকে বের হয়ে যেতে। এ সময় আব্দুল হাই কানু আকুতি করে বাড়ি থেকে বের হবেন না বললে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা এত বছর বাড়িতে থাকতে পেরেছি?’
একপর্যায়ে কানু জুতার মালা সরিয়ে এলাকায় থাকার আকুতি জানালেও তাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিতে থাকেন ঘিরে থাকা লোকজন। ওই ব্যক্তিদের একজনকে বলতে শোনা যায়- এক গ্রাম লোকের সামনে মাফ চাইতে পারবেন কিনা? তখন কানুকে দুই হাত উপরে তুলে মাফ চাইতে দেখা যায়। ঘটনার পর অসুস্থ অবস্থায় ওই মুক্তিযোদ্ধাকে ফেনীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়ন ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মুজিবুল হকের রোষানলে পড়ে বিগত ৮ বছর এলাকায় যেতে পারেননি। বাড়িঘরে হামলা করাসহ একাধিক মামলা দেওয়া হয় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :