AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ভ্যাট প্রত্যাহারে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ব্যবসায়ীদের


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৭:৪১ পিএম, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
ভ্যাট প্রত্যাহারে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ব্যবসায়ীদের

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবকে ভোক্তার স্বার্থবিরোধী বলে উল্লেখ করেছে দেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের ব্যবসায়ীরা। তারা অবিলম্বে এই প্রস্তাবগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সদস্যরা এসব উদ্বেগের কথা জানান।

পাশাপাশি সরকারকে আগামী সাতদিনের মধ্যে এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। বাপা সদস্যরা জানিয়েছেন, যদি এই সময়ের মধ্যে আরোপিত ভ্যাট ও শুল্ক এবং গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব থেকে সরকার সরে না আসে, তবে তারা স্বেচ্ছায় কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ এবং সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এছাড়া এ ইস্যুতে সরাসরি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

বাপার নেতারা মনে করেন, প্রধান উপদেষ্টাকে সরাসরি এর প্রভাব তুলে ধরতে পারলে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলে তারা বিশ্বাস করেন।

ব্যবসায়ীদের মতে, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর ভ্যাট ও করের বোঝা চাপানো হলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশের শ্রমজীবী, প্রান্তিক কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। যে হারে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য বিস্কুট, কেক, জুসসহ বিভিন্ন খাদপণ্য ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। ভোক্তারা ক্রয়ক্ষমতা হারালে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে এরই মধ্যে এ খাতে সরাসরি কাজ করা প্রায় আড়াই লাখ শ্রমিকের কাজ হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে পুরো খাত মুখ থুবড়ে পড়বে। পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানিতে বাজার হারানোর শঙ্কা তৈরি রয়েছে। ফলে অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা আসবে। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর যে উদ্দেশ্য, সেটি হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাপা সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, আমরা এমন একটি খাত নিয়ে ব্যবসা করি যার সঙ্গে সরাসরি শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে প্রান্তিক কৃষক জড়িত। সরকার থেকে বলা হচ্ছে, এতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। দেশের মানুষের সংস্কৃতি যদি দেখি, চায়ের দোকান থেকে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ সকালে এক কাপ চা, একটি বিস্কুট কিংবা কেক খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন। এখন যদি বিস্কুট ও কেকের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর সঙ্গে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায়, তবে ৫ টাকার একটি বিস্কুট আর তৈরি করা সম্ভব হবে না। ফলে নিম্নআয়ের মানুষটি সহজে ক্ষুধা নিবারণের পথটি হারাবেন।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমরা প্রান্তিক কৃষকের আম, টমেটো, আনারস, কলাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে জুস, ড্রিংকস, আচার, সস তৈরি করি। টমেটো, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প পণ্যসমূহের ওপর মূসক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন প্রান্তিক চাষীরা। এখন যদি ভ্যাট ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায় তবে অনেকেই এসব পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া এর প্রভাবে কারখানা বন্ধ হলে প্রচুর শ্রমিকের জীবনে অনিশ্চয়তা নেমে আসবে। তাই সরকারকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের শ্রমশক্তির উল্লেখযোগ্য অংশ এ খাতে নিযুক্ত। কৃষিখাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের অবদান জিডিপিতে এখন ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। বর্তমানে বাপা’র প্রায় ৪০০ সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। এর বাইরেও পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাদপণ্য উৎপাদন করছেন; যেখানে ৫ লাখের অধিক শ্রমিক কর্মরত। পাশাপাশি কাঁচামাল সরবরাহকারী, খুচরা বিক্রেতাসহ পরোক্ষভাবে প্রচুর লোক এ খাতে যুক্ত। বর্তমান কঠিন প্রেক্ষাপটে হঠাৎ এ ধরনের উদ্যোগে সবাই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক, এসিআই এগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারি, এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুইয়া, আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম, কিশোয়ান ও বনফুল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল ইসলামসহ কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

একুশে সংবাদ/ব.জ/এনএস

Link copied!