আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশ প্রশাসন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখনো উদ্বেগ কাটেনি। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত।
গত পাঁচ মাসে কুষ্টিয়ায় অন্তত ১৫টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে দৌলতপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, একই এলাকায় আপন দুই ভাই ও এক জামায়াত নেতাকে কুপিয়ে খুন, এবং পদ্মায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার হত্যার ঘটনা বেশ আলোচিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব অপরাধ দমনে তৎপর রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গত ৫ আগস্টের পর পুলিশ প্রশাসন পুনর্গঠিত হলেও চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা থেমে নেই। অনেকেই অভিযোগ করছেন, মাদক কারবারিরাও আগের চেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
কুষ্টিয়ার এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘স্বয়ং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এখন নিরাপদ নন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই তারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন।’
কুষ্টিয়া জেলা সনাকের সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার অবনতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এখন দিনের বেলাতেও মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। সন্ধ্যার পর অপরাধের ঘটনা আরও বেড়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জানান, সবার সঙ্গে সমন্বয় করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এসি ল্যান্ডসহ আমাদের যেসব ম্যাজিস্ট্রেট আছেন ওনারাও সে বিষয়গুলো দেখবেন বলে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
রংপুর শহরে ৫ মাসে ৪টি হত্যাকাণ্ড ছাড়াও প্রায় ৩০টি চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জেলাটির একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘অনেকদিন হয়ে যাচ্ছে কিন্তু পুলিশ প্রশাসন তাদের কোনো সাহায্য পাচ্ছি না।’
ফেনীতে আগস্টের পর ১৫টি খুন, ৩৯টি চুরি, ১৭টি ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি মুহুরি প্রজেক্ট এলাকায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে গিয়ে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব হারান এক রেল কর্মকর্তা। তবে আগের চেয়ে পরিস্থিতি ভালো বলে দাবি পুলিশের।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে দোকান বন্ধ করে ওরা যখন যায়, রাতের বেলা তখন চুরি হয় তালা কেটে। বাসা বাড়ি সব জায়গাতেই চুরি ডাকাতি হচ্ছে।’
ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক আছে। মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা আছে। আমাদের অব্যাহত চেষ্টা চলছে।’
পুলিশ জানায়, ফেনীতে বিভিন্ন অভিযোগে ১ হাজার ৮২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :