পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রাজধানীর রমনায় আয়োজিত নিরাপত্তা মহড়ায় ধর্মীয় অবস্থানকে "অপরাধী" হিসেবে উপস্থাপনের অভিযোগে স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)-কে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি এই ঘটনাকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে অভিহিত করে একাধিক ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার দৈনিক আল-ইহসান পত্রিকার প্রতিবেদক মুহম্মদ আরিফুর রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ রেজিস্টার্ড ডাকযোগে এ নোটিশটি পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, আরটিভির ফেসবুক পেজে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ভিডিওতে পুলিশ মহড়ায় কিছু ব্যক্তিকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যারা উচ্চস্বরে বলেন, "পহেলা বৈশাখ মানি না" এবং "পহেলা বৈশাখ ইসলামবিদ্বেষী কাজ"। এরপর পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো এবং ধরপাকড়ের দৃশ্য প্রদর্শন করে।
নোটিশে অভিযোগ করা হয়, "পহেলা বৈশাখ মানি না" — এই বক্তব্যকে অপরাধ হিসেবে উপস্থাপন করা এবং সেই কারণে তাদের "গুলির যোগ্য" হিসেবে চিত্রিত করা ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গুরুতর লঙ্ঘন।
এছাড়া, নোটিশে উল্লেখ করা হয় যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরতের পর নওরোজ ও মেহরেগান নামক প্রাক-ইসলামী উৎসব বাতিল করে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা নির্ধারণ করেছিলেন। এই সুন্নাহ অনুসরণ করে বহু ধর্মপ্রাণ মুসলমান পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও চর্চার অংশ, যা বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৪১ অনুচ্ছেদে নিশ্চিতকৃত মৌলিক অধিকার।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, পুলিশের মহড়ায় প্রদর্শিত এই আচরণ বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ধারা ২৯৫(ক)-এর আওতায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শামিল।
আইনি নোটিশে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা, মহড়ার পরিকল্পনায় জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। অন্যথায়, উচ্চ আদালতে রিট দায়েরসহ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ব.জ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :