প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটছে দুর্ঘটনা, গুম, খুন, অপহরণ, বলাৎকারসহ নানারকম দুর্ঘটনা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর দেশের সাধারণ মানুষ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। নতুন দিন গড়ার স্বপ্নও দেখেছিলেন । কিন্তু তা বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি দীর্ঘ পাঁচটি মাসেও। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারন জনগন, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রচেষ্টায় সফল হওয়ায়, নতুন দিনের স্বপ্ন বুনে ছিলেন দেশের সবশ্রেনী পেশার মানুষ। এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি বাংলাদেশের মানুষ। ফলে যে যার মতো স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু স্বৈরাচার সরকারের পতনের সাথে সাথে দেশের আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটতে থাকে। দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠে উশৃঙ্খল অপরাধ চক্রের নেতারা।
সাম্প্রতিক সময়েও অপরাধের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। যেমন গুম, খুন, অপহরণ, মুক্তিপন, বলাৎকারসহ বিভিন্ন অপরাধের পরিধি বেড়েই চলেছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে, আবার কোথাও প্রকাশ্যে চলছে অপরাধ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আঁতাঁত করে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে চলছে রমরমা চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে হচ্ছে সংঘর্ষ। প্রশাসনের মুখ থুবড়ে পড়েছে। অনেক সময় বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতাদের উত্তাপে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
মাদক ব্যবসায়ীরা খোলা বাজারে সবজি বিক্রেতার মতো মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মোহরা দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। মাদক ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে যুব সমাজের হাতে তুলে দিচ্ছে মাদক, আসক্ত হচ্ছে যুবসমাজ। সমাজের তরুণদের হাতে চলে যাচ্ছে সামাজ পরিচালনার দায়িত্ব। প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা, অপরাধের মানচিত্র দিন দিন বেপরোয়া গতিতে বাড়ছে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিদের রয়েছে নিজস্ব রাজনৈতিক কোন্দল। দখলদারিত্বের ফলে নিজেদের মধ্যে হচ্ছে সংঘর্ষ। দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে দেশের পরিস্থিতি।
এই নিয়ে হতাশ দেশের সাধারণ বুদ্ধিজীবী, সমাজ বিজ্ঞানী, সভ্য ও সুশীল শ্রেণীর লোকজন।
তাঁদের একটা প্রশ্ন এই ভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। দেশে সর্ব প্রথম আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সমাজের সকলে মিলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই দেশে সাধারণ মানুষের মুক্তি মিলবে। মানুষ প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নিতে পারবে। দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে, বিজয়ের প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করবে।
খন্দাকার সোহাগ :
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
আপনার মতামত লিখুন :