সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা লুট করার জন্য বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পদযাত্রার পূর্ব বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিকেল সোয়া ৩টায় গাবতলী থেকে মাজার রোড হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর গিয়ে শেষ হয় বিএনপির এই পদযাত্রা কর্মসূচি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকার দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস দিতে পারছে না; এ জন্য দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ হচ্ছে তারা আজকে আমদানি করতে পারছে না। দ্রব্যমূলক প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের লোকেরাই এই কাজগুলো করছে। তারা বিদেশে টাকা পাচার করে এদেশে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছে। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারের বিদায়ের আন্দোলনে আমরা অগ্রসর হব। অতি দ্রুত আমরা এই সরকারকে বিদায় দিতে সমর্থ হব।’
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘মামলা নির্যাতন করে মনে করেছিলেন বিএনপিকে আপনারা ঘরে বসিয়ে দেবেন। বিএনপি এবং দেশের জনগণ প্রমাণ করেছে তারা বসে যায়নি বরং আপনাদের বিদায় করার জন্য রাস্তায় নেমেছে। তারা (আওয়ামী লীগ) এ দেশের কোনো মেরামত করতে পারবে না। যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিদায় হবে এবং এ দেশের মানুষের জন্য ততই মঙ্গল।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আপনারা যত রকমের হুংকার দেন না কেনো এ দেশের জনগণ ইতোমধ্যে আমাদের সমাবেশগুলোর মাধ্যমে আওয়াজ তুলেছে এই সরকারকে তারা আর দেখতে চায় না। কেনো দেখতে চায় না- এই সরকার বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। বর্তমান আবার গায়ের জোরে সরকার ক্ষমতা থাকার জন্য গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয় স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও কেউ নিজের হাতে ভোট দিতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘যারা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণকারী, চোর তাদেরকে কেউ আর ভোট দিতে চায় না। সেজন্যই আজকে আওয়ামী লীগের ভয়। এই আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতায় থেকে আমাদের অর্থনীতিকে তছনছ করে দিয়েছে। কেনো এটা করেছে? আপনারা সকলেই জানেন তাদের দুর্নীতি, মেগা প্রজেক্ট এর নামে দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং দেশের টাকা বিদেশে পাচার।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের সময় শেষ আগামী দিনে বাংলাদেশ হবে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বাংলাদেশ। আপনাদের বিদায়ের শুভযাত্রাই হচ্ছে এই পদযাত্রা। আপনারা এটাকে যা কিছুই মনে করেন না কেনো আপনাদের বিদায়ের পদযাত্রা হচ্ছে আমাদের এই শান্তিপূর্ণ সফল পদযাত্রা।’
পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা বরকত উল্লাহ বুলু, হাবিবুর রহমান হাবিব, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, ডা. রফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুল আলম নীরব, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মুন্সী বজলুল বাসিত আঞ্জু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের মামুন হাসান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, এসএম জাহাঙ্গীর আলম, মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে গত শনিবার রাজধানীর বাড্ডা থেকে রামপুরা হয়ে মালিবাগ হোটেল পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। এরপর গতকাল সোমবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়ে শ্যামপুর পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। আগামীকাল বুধবার মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। প্রতিটি পদযাত্রা বেলা ২টায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
একুশে সংবাদ.কম/স.ট.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :