বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক একটা ব্যবস্থা আইনজীবী সমিতি, এই সমিতিকে দখল করার জন্য এই আওয়ামী লীগের সরকার বেআইনিভাবে দখল করার জন্য সকল প্রকার শক্তি প্রয়োগ করেছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা ব্যবহার করতে দ্বিধা করছে না। এই একটা জায়গা আইনজীবী সমিতি, যেখানে মানুষের আস্থা ছিল, সেই আস্থাটাও এখন পুরোপুরি ভাবে নির্মুল হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের পৌর মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, মানুষের যে অধিকার তা পুরোপুরিভাবে হরণ করা হয়েছে। লুন্ঠিত হচ্ছে ব্যক্তিগত অধিকার এবং সংবিধানকে এখানে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন আগামীতে যে সংসদ নির্বাচন সে নির্বাচনের জন্যে আওয়ামী লীগ নতুন করে ২০১৪ ও ২০১৮ এরমত তামাশা শুরু করেছে। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই- আমরা কেনা তামাশার নির্বাচন বিশ্বাস করিনা। আমরা বিশ্বাস করি- জনগণ যেখানে তার সত্যিকারের ভোট দিতে পারবে, তার মত প্রকাশ করতে পারবে; এই ধরনের একটা নির্বাচন আমরা চাই।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেই খান্ত হননি, তারা অর্থনৈতিক যে ভিত্তিগুলো সেগুলোকে তারা নরবরে করে দিয়েছেন। অথচ তারা বিভিন্ন রকমের কথা বলেন; বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। এমন উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে এখানে ব্যাংক লোপাট হয়ে যাচ্ছে; বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ ফাণ্ড হ্যাক হয়ে যাচ্ছে। সেগুলোর দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের কোন খেয়াল নেই।
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের এমন কি উন্নয়নমূলক কাজ করছে যে আজকে একটা আগুন নেভানোর মত তাদের বিভাগ পর্যন্ত নাই। যেই ফায়ার বিগ্রেড আছে, তারা ৪০টির উপর ইউনিট কাজ করার পরও বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। অর্থাৎ এই ফায়ার বিগ্রেডের সেরকম সক্ষমতা নেই এত বড় আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়ার মত।
মির্জা ফখরুল বলেন, বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, সেই অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজার পুরোপুরি ভাবে ধুলিসাৎ ও মিশে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে। এরআগে সিদ্দিক বাজারে ও বনানীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাগুলো কেন ঘটছে? এ ঘটনাগুলো হচ্ছে এই জন্যে সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো দায়িত্বে রয়েছে দেখভাল করার। তারা দেখবে কোথায় আগুন নেভানোর কোন ব্যবস্থা আছে কিনা। কিন্তু আমরা মনে করি সরকারের এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যেটা বলতে চাই, এই আওয়ামী লীগ সরকারের এখন সময় হয়ে গেছে পুরোপুরি ভাবে; তাদের চলে যাওয়া উচিৎ। আমাদের বাংলাদেশকে আবার আগের জায়গায় ফিরে দেওয়া উচিৎ।
ফখরুল বলেন, কারণ আমরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, আমরা যে বাংলাদেশকে পেতে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম,সেই বাংলাদেশ আজকে একটা পুরোপুরি ভাবে একক গণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়েছে। অথচ আমরা লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্যে। সেই জন্যেই আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করছি; আমরা বিশ্বাস করি দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, দেশের মানুষের আন্দোলন-লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক একটা রাষ্ট্র গঠন করতে সক্ষম হব আমরা।
এসময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানসহ বিএনপির বিভিন্ন সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ.কম/বি.দা.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :