‘আপনারা ইইউ ও পশ্চিমা দেশের প্রতি এত ক্ষুব্ধ কেন? এত গোস্সা কেন? আসলে ওবায়দুল কাদেরদের মনের মধ্যে কালবৈশাখীর ঝড় বইছে। ক্ষমতার হারানোর ভয় ঢুকছে। আমি বলতে চাই এবার আর রক্ষা পাবেন না। তাদের পতন সুনিশ্চিত।’
সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে এক অনশন অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রকে কবর দেওয়ার জন্য, মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করেছেন। এক ভয়ংকর মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করেছেন।’
কর্মসূচিতে বক্তব্যকালে অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বলছেন মার্কিন মন্ত্রী উজয়া জায়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেননি। বিএনপি বিদেশিদের কাছ থেকে ঘোড়ার ডিম পেয়েছে। তাহলে আপনারা ইইউ ও পশ্চিমা দেশের প্রতি এত ক্ষুব্ধ কেন?’
অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের অস্তিত্ব থাকবে না এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব দুর্বল হবে বলে মন্তব্য করেন এ বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন আমি পার্শ্ববর্তী দেশকে অনেক কিছুই দিয়েছি, যা তারা সারাজীবন মনে রাখবে। আপনি দেশকে উজার করে দেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বকে হুমকির মধ্যে ফেলেছেন। দেশ বিক্রি করে দিয়েছেন।’
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘১৯৯৪ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা এখন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চান কেন? সংবিধানের দোহাই দিয়ে ২৪ ঘণ্টা বাউল সঙ্গীত কেন? আমি পরিষ্কার বলতে চাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এ সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘জনগণ অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে, ভোট চোরদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তাই তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) জনগণের ভোট ডাকাতি করার জন্য আবারও মাস্টারপ্ল্যান করছে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী দিয়ে গভীর রাতে, সন্ধ্যারাতে বা দিনের বেলায় ভোট ডাকাতি করতেই সংবিধানের দোহাই দিচ্ছেন।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা করেন। স্বাধীনতার মূল চেতনাই হলো গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করে, বাকস্বাধীনতা হরণ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন। আসলে তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি বলে খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধাদের তারা বার বার অপমান করেছেন। তারা স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তাজউদ্দিন আহমেদসহ বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধাদের সহ্য করতে পারেন না।’
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বামী তার বইয়ে লিখে গেছেন, আমরা মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে উৎসাহিত হয়েছি। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র হত্যা করে মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে মিথ্যা বলানোর চেষ্টা করছেন। ইতিহাস বিকৃতি করছেন।’
রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনার বাবা কখনও মুজিব নগর পরিদর্শন করেননি কেন? আপনার স্বামীকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠাননি কেন?’
মুক্তিযোদ্ধা দলের এই অনশন কর্মসূচি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একদফা আন্দোলনে প্রেরণা জোগাবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা অনশনে অংশ নেন। সকাল ১১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ অনশন কর্মসূচি চলবে।
একুশে সংবাদ/স/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :