বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশের ১৮ কোটি মানুষ বিএনপির সঙ্গে আছে। জেল, জুলুম কারগার দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। এবারের লড়াই জীবনপন লড়াই।’
শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজিত গণমিছিলের পূর্বে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কেরিক্যাচাল করে ২০১৪-২০১৮ সালের মতো আবারো ক্ষমতায় যেতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এবার জনগণ তা হতে দিবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগের যে দাবি তা গণভবন এবং বঙ্গভবন পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একটাই দাবি, দাবি কি? তখন তিনি নেতাকর্মীদের সাথে বলেন, হাসিনার পদত্যাগ। এ সময় ফখরুল বলেন, এই দাবি গণদাবিতে পরিণত করতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘১৪ ও ‘১৮ সালের মতো নির্বাচন করে পার পেতে চায় আওয়ামী লীগ। দেশের জনগণ কি সেটা হতে দিবে? নেতাকর্মীরা বলেন, না। শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
মানে মানে কেটে পড়ুন পদত্যাগ করুন, সরকারের প্রতি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি বলেন, না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে। এইবারে লড়াই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে লড়াই, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লড়াই। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নতুন যুদ্ধে নতুন লড়াই শুরু করেছি। মিছিলের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই তোমাদের দিন শেষ। মানে মানে পদত্যাগ করো।
বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে বিএনপি নেতাকর্মীদের জেল দেয়া হচ্ছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যত নির্যাতন, গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপ কর আন্দোলন থামানো যাবে না। জনগণ এবার তাদের দাবি আদায় করবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) বাতিল ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। এবারের আন্দোলনে সরকারের পতন করা হবে। মানে মানে সরে না গেলে রাজপথেই সরকার পতন ঘটানো হবে।
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দুইটা নতুন দলকে নিবন্ধন দেয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ফখরুল বলেন, কেউ এই দুই দলকে চেনে না। এদের দিয়ে সরকার নির্বাচন-নির্বাচন খেলা খেলতে চায়। এবার এ খেলা খেলতে যাওয়া হবে না বলেও সরকারকে হুশিয়ার করে দেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সৈয়দ মোয়াাজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।
টানা ১২ দিন বিরতির পর গণমিছিল নিয়ে রাজপথে ফিরেছে বিএনপি। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে গণমমিছিল করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি। বাদ জুম্মা দুপুর দুইটায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বাড্ডা সুবান্ত টাওয়ার থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত গণমিছিল করার করার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারনে প্রস্তুতিতে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হয়। পরে বিকাল ৩টা থেকে সুবাস্তু টাওয়ার থেকে আবুল হোটেলের দিকে গণমিছিল শুরু করে মির্জা ফখরুল সহ মহানগর উত্তর বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এর আগে সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন গণমিছিলে। তারা বলেন, আজকের গণমিছিল থেকে আমাদের গণদাবি একটাই- বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :